দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সবুজ আবির খেললেন তৃণমূল প্রার্থী শাহানারা মিদ্দে। নিজস্ব চিত্র
মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে যায়নি। তার আগেই নিজেকে ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী’ ঘোষণা করে বুধবার সবুজ আবির খেলে ফেললেন হাওড়ার সাঁকরাইল ব্লকের ধূলাগড় পঞ্চায়েতের ১১৯ নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী শাহানারা মিদ্দে। এ দিন পর্যন্ত তিনি বাদে অন্য কেউ ওই আসনে প্রার্থী হওয়ার আবেদন করেননি বলে তাঁর দাবি।
আজ, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন। তার আগে শাহানারা কী করে নিজেকে ‘জয়ী’ বলছেন? শাহানারার দাবি, ‘‘বিরোধীরা কেউ মনোনয়ন জমা দেবেন না। তৃণমূলের প্রার্থী পছন্দ হওয়ায় বিরোধীদের তরফে প্রার্থী দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ সেই আনন্দেই বুধবার বিকেলে মনোনয়ন জমার পরে আবির খেলেছেন বলে তিনি জানান।
বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, শাসক দলের দাপটে ওই এলাকায় ভোটে দাঁড়ানোর পরিবেশ নেই। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নন্দলাল মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসা ইস্তক তৃণমূলের ‘চোখরাঙানি’তে ওই এলাকায় বিরোধীদের ‘নড়াচড়া’ কার্যত বন্ধ। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী দলের প্রার্থী হওয়ায় মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, রুজি-রোজগার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এমন উদাহরণও আছে। প্রাণ সংশয়ও হতে পারে। ভোটে দাঁড়ানোর পরিস্থিতি নেই।’’
বিজেপির সাঁকরাইল-২ মণ্ডলের সভাপতি পলাশ হাজরারও দাবি, ‘‘তৃণমূল ওই এলাকা সন্ত্রস্ত করে রেখেছে। ভোটে দাঁড়ালে পাছে হামলার মুখে পড়তে হয়, সেই আশঙ্কায় প্রার্থী দেওয়া হয় না।’’ ২০১৬ সালে এলাকায় একটি অশান্তির ঘটনার পর থেকেই বিজেপি কর্মীরা কার্যত ‘গুটিয়ে’ রয়েছেন বলে ওই দল সূত্রে খবর।
তৃণমূল সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। শাহানারার স্বামী সিরাজ মিদ্দে বলেন, ‘‘এই বুথে ৪৭৫ জন ভোটার। সবাই আমার স্ত্রীকেই জয়ী দেখতে চান। বিরোধীরাও প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবেননি।’’ তৃণমূলের সাঁকরাইল বিধানসভা সভাপতি অমৃত বসুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিরোধীদের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। সন্ত্রাসের আবহ কোথায়! সিপিএম বা বিজেপি প্রার্থী দিতে চাইলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমি নিজে নিয়ে গিয়ে মনোনয়ন জমা করিয়ে দেব।’’
বিরোধীদের বক্তব্য, শাসকের আশ্বাসে তাঁদের ভরসা নেই। বিডিও (সাঁকরাইলের) নাজিরুদ্দিন সরকার জানান, সন্ত্রাসের কোনও অভিযোগ মেলেনি। এমন কোনও অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।