কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে), অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে নকল করে জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টিকে লুফে নিয়ে তাঁর বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই পথে নেমে পড়েছে বিজেপি। এ বার কোন্নগরে দলীয় কর্মসূচিতে এসে কল্যাণ দাবি করলেন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে তাঁর পাশে রয়েছেন। সাংসদ বিস্মিত, যে প্রসঙ্গকে ‘স্পোর্টিংলি’ নিতে হয়, তা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে!
মিমিক্রি বিতর্ক মাথাচাড়া দিতেই তাকে ‘হালকা চালে’ বলা হিসাবে অভিহিত করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও গত মঙ্গলবার ঘটা এই ঘটনার পর বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তৃণমূলের যে প্রতিনিধিদল দেখা করতে গিয়েছিল, তা থেকে শেষ মুহূর্তে বাদ পড়েন কল্যাণ। শুরু থেকেই কল্যাণ অবশ্য নিজের ব্যাখ্যা দিয়েই যাচ্ছিলেন। শনিবার কোন্নগরেও তিনি বলেন, ‘‘আমি তো ভাবতেই পারছি না এ রকম একটা ইস্যু, যাকে স্পোর্টিংলি নেওয়া উচিত। সেটাকে অন্য ভাবে রাজনীতির জায়গায় নিয়ে গেলেন। ভাল করেছেন। আপনি বলেছেন, আমরাও জবাব দেব। আমাকে অভিষেক বলেছে, ফাটিয়ে বলো কল্যাণদা এ বার তোমার সময়।’’ শ্রীরামপুরের সাংসদের মুখে এই দাবি শুনেই হাততালিতে ফেটে পড়ে প্রেক্ষাগৃহ। কল্যাণের বক্তব্যে ঘুরেফিরে আসে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর প্রসঙ্গও। কার্টুনিস্টদের নিয়ে তাঁর মনোভাবের কথা। কিন্তু তাৎপর্য হল, মিমিক্রি ইস্যুতে অভিষেককে নিয়ে তাঁর দাবি।
একটা সময় অভিষেকের সঙ্গে কল্যাণের সম্পর্ক নিয়ে জোর জল্পনা চলেছিল তৃণমূলে। সেই জল্পনার নেপথ্যে ছিল কল্যাণেরই কিছু মন্তব্য। যেমন, ‘‘আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর কাউকে নেতা বলে মানি না।’’ কম জলঘোলা হয়নি তাঁর ‘‘আগে ত্রিপুরা, গোয়া জিতে দেখান, তার পর নেতা মানব’’ জাতীয় মন্তব্য নিয়েও। সেই কল্যাণকেই দলের জনসংযোগ যাত্রার পর অভিষেকের ভূয়সী প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, জনসংযোগ যাত্রা যখন শ্রীরামপুর লোকসভায় পৌঁছোয়, তখন সাংসদ হিসেবে সক্রিয় কল্যাণকে অভিষেকের পাশে দেখা গিয়েছিল আগাগোড়া। সম্প্রতি ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র অভিযোগ নিয়ে দলের আন্দোলন-কর্মসূচিতেও অভিষেকের পাশেই দেখা গিয়েছিল কল্যাণকে। সেই কল্যাণই ধনখড়কে নকল করার বিতর্কে অভিষেককে পাশে পেলেন বলেও দাবি করলেন।