(বাঁ দিকে) অরূপ রায়। (ডান দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নবান্নের সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠকে হাওড়া প্রশাসনের কাজ নিয়ে গুচ্ছ অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন নাগরিক পরিষেবায় হাওড়া পুরসভার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরপ্রশাসক থেকে ও হাওড়ার মোট চার বিধায়কের সমালোচনা করেছেন। আর ওই প্রসঙ্গে ভিন্ন অভিযোগ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা হাওড়া মধ্য বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ রায়। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে হাওড়া পুরসভার বোর্ড নেই। পুরপ্রতিনিধি নেই। ‘ম্যান পাওয়ার’ (লোকশক্তি) কম। প্রাক্তন কাউন্সিলরেরা জানেন না যে তাঁরা আর টিকিট পাবেন কি না। তাই তাঁরা ইনঅ্যাক্টিভ (নিষ্ক্রিয়)।’’
অরূপের এ-ও দাবি, দীর্ঘ ছ’বছর পুরবোর্ড নেই বলে প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘পুর কমিশনার এবং পুর প্রশাসক, দু’জনের চোখ দিয়ে এত বড় শহরটা দেখা যায় না।’’ মুখ্যমন্ত্রী বহুতল নির্মাণ নিয়ে যে কথা বলেছেন, সেটাও মেনে নিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেক বেআইনি বহুতল তৈরি হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ বিষয়ে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম।’’ পাশাপাশি পুরসভার বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে বিধায়কদের কোনও ভূমিকা নেই বলে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন অরূপ। তিনি বলেন, ‘‘বিধায়কদের কোনও ভূমিকা নেই পুরসভার বিষয়ে।’’
রাস্তা, পানীয় জল থেকে নোংরা এবং বর্জ্য নিষ্কাশন নিয়ে হাওড়া পুরসভার সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তৃণমূলত্যাগী এবং এ বারের বিজেপির লোকসভা প্রার্থীকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রথীন যখন চেয়ারম্যান (হাওড়া পুরসভা) ছিল, তখন হাওড়ার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। হাওড়ার অনেক রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকার জায়গা পর্যন্ত নেই।’’ তিনি জানান, রাজ্য সরকারের একের পর এক জায়গা বেদখল হয়ে যাচ্ছে। বাইরের রাজ্যের লোকজন এসে ঘাঁটি গাড়ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোথাও জবরদখল হলে কেন পদক্ষেপ হচ্ছে না?’’ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, টাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের কেউ কেউ অনৈতিক এবং অবৈধ ভাবে জমি ‘ভরানোর’ কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেকে আছেন এর মধ্যে। নাম বলে কাউকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না। তবে একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে। খালি জায়গা দেখলেই তাঁরা লোক বসাচ্ছেন। বাংলার আইডেন্টিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ সবে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’’ এ সবের প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ।