সিঙ্গুরের কর্মসূচিতে মন্ত্রী বেচারাম মান্না। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রাপ্য আদায়ের লড়াইয়ে কৃষকদের পাশে রাজ্য সরকার থাকবে বলে জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। মঙ্গলবার সিঙ্গুরে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির সরকার নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধির টাকা রাজ্যের কৃষকদের দিচ্ছিল না। রাজ্য সরকার লড়াই করে সেই টাকা আপনাদের পাইয়ে দিচ্ছে। তবে যা পাচ্ছেন, তা প্রাপ্যের অনেক কম। আগামী দিনে প্রাপ্য বকেয়া আদায়ের জন্য রাজ্য সরকার লড়াই করবে।’’
সিঙ্গুর ব্লক কৃষি আধিকারিকের দফতরে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই করা চিঠি প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধির প্রকল্পের টাকা প্রাপকদের হাতে তুলে দেন সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম। কৃষকদের প্রাপ্য টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দ্বিচারিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কৃষক বন্ধু প্রকল্পে সিঙ্গুর ব্লকের ২৩ হাজার কৃষক টাকা পাচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য সমস্ত নাম পাঠানো সত্ত্বেও মাত্র ২,০০০ হাজার কৃষকের কাছে প্রধানমন্ত্রী টাকা পাঠালেন। এটা শুধু সিঙ্গুর ব্লকের ছবি। পুরো রাজ্যে তা হলে কত হবে ভাবার বিষয়।’’
মন্ত্রী বেচারামের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি-র হুগলি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি মধুসূদন দাস বলেন, ‘‘কৃষকদের বঞ্চনা তৃণমূল সরকার করেছে। কেন্দ্র সরকার বারবার কৃষকদের নামের তালিকা চেয়েছিল। কিন্তু সেই তালিকা পাঠানো হয়নি। যার ফলে কৃষকরা দীর্ঘদিন কিসান সম্মাননিধি প্রকল্পের টাকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত ছিল। নির্বাচনের সময় অমিত শাহ বলেছিলেন, দেশের সর্বত্রই প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পের সুবিধা পেলেও পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু কৃষকরা সেটা পায়নি। কেন্দ্র সরকার এই প্রকল্পের সুবিধা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে দায়বদ্ধ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সরকার সেটা করতে দেয়নি। আর এখন কৃষকদের নাম পাঠানো হলেও সেখানে দলবাজি করছে। বিজেপি সমর্থক কৃষকদের নাম পাঠানো হয়নি।’’
অন্যদিকে, সিঙুর ব্লক কৃষি আধিকরিক জয়দীপ বসু রায় বলেন, ‘‘১৫ হাজার কৃষকের নাম আমরা দিল্লিতে পাঠিয়েছি। আজ পর্যন্ত ২,০৫৯ জন টাকা পাচ্ছে। বাকিরা কেন বাদ গেলেন, তা জানা নেই। হয়ত পরেও পেতে পারে। বাকি নাম পাঠানোর কাজ চলছে।’’
সিঙ্গুরের রতনপুরের কৃষক ভোলানাথ জানা বলেন, ‘‘সরকার টাকা দিলে সেটা তো ভালই। রাজ্য সরকারের কৃষকবন্ধুর টাকা পেয়েছি কয়েকবার। কেন্দ্রের টাকা পায়নি। তবে আবেদন করেছি অনেক দিন আগেই। এ বার দেবে বলছে। পেলে চাষের কাজে লাগবে। বর্ষায় তিল, বাদাম, ধানের ক্ষতি হয়েছে।’’