এত দিন তাঁরা নিজেদের সরকারি কর্মী হিসাবেই জেনে এসেছেন, চাকরিজীবনের শেষে এসে সেই ধারণা হঠাৎ চুরমার হয়ে গিয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। প্রতীকী ছবি।
এক ভাবে দেখলে, এ-ও যেন ‘সরকারি চাকরি’র দাবিতে পথে নামা। তবে, ঠিক নিয়োগের দাবি নিয়ে নয়, এই পথে নামা আসলে চাকরির ‘সরকারি’ স্বীকৃতির দাবিতে।
তার কারণ, এত দিন তাঁরা নিজেদের সরকারি কর্মী হিসাবেই জেনে এসেছেন। অথচ, চাকরিজীবনের শেষে এসে সেই ধারণাই হঠাৎ চুরমার হয়ে গিয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। তাই অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই এখন কর্মজীবনের শুরু থেকে সরকারি কর্মী হিসাবে স্বীকৃতীর দাবিতে আজ, বুধবার দুপুরে আন্দোলনে নামছেন হাওড়া পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। যার ফলে দুপুরের পর থেকে পুরসভার দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অন্য পুরকর্মীরা।
হাওড়া পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠন ‘টেকনিক্যাল স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে মঙ্গলবারও অভিযোগ করা হয়েছে, ১৯৮৬ সালের পরে গঙ্গার পার্শ্ববর্তী পুরসভাগুলিতে ‘ক্যালকাটা আর্বান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ৩’-এর জন্য ৪৬৫ জন ইঞ্জিনিয়ার ও করণিককে নিয়োগ করেছিল রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। যাঁদের মধ্যে ৩৫৬ জন চাকরির প্রথম দিন থেকে সরকারি কর্মী হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ায় অবসরকালীন সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পেয়ে অবসর নিয়েছেন। অথচ, এখন হঠাৎ করেই হাওড়া পুরসভার ১০৯ জন ইঞ্জিনিয়ার ও করণিকের ক্ষেত্রে দেখানো হচ্ছে যে, তাঁরা কর্মজীবনের প্রথম ২০ বছর ঠিকাকর্মী হিসাবে কাজ করেছেন। যার ফলে চাকরিজীবনের অন্তিম পর্যায়ে এসে চরম বিপদের মধ্যে পড়েছেন তাঁরা।
এরই প্রতিবাদে অর্ধদিবস গণছুটি নিয়ে বিক্ষোভ-কর্মসূচির সূচনা করতে চলেছেন হাওড়া পুরসভার পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারেরা। আজ, বুধবার দুপুর থেকে পুর কমিশনারের অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁদের সংগঠন ‘টেকনিক্যাল স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি অরুণাভ মজুমদার।
অরুণাভ বলেন, ‘‘আমরা বুধবার দুপুরে অর্ধদিবস গণছুটি নিয়ে পুর কমিশনারের অফিসের সামনে পোস্টার, প্ল্যাকার্ড-সহ বসে পড়ব। আগামী ১৭ তারিখ গণছুটি নিয়েফের কমিশনারের ঘরের সামনে অবস্থান করব। তার পরে ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও পয়লা ফেব্রুয়ারি, পর পর তিন দিন গণছুটি নিয়ে বিক্ষোভ দেখাব। তাতেও সমস্যার সমাধাননা হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে এগোব।’’
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর সৌমেন দেবলেন, ‘‘এখন তুঘলকি রাজ চলছে। যে সমস্ত ইঞ্জিনিয়ার হাওড়া শহরের বাসিন্দাদের জন্য নিজেদের জীবনের এতগুলো বছর দিলেন, তাঁদের এ ভাবে বঞ্চিত করা যাবে না কোনও মতেই। আমরাও ওই আন্দোলনে ইঞ্জিনিয়ারদের পাশে আছি।’’