হৈমন্তী সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করলেন মা। নিজস্ব ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তাপস মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গোপাল দলপতির নাম আগেই প্রকাশ্যে এসেছে। নেপথ্যে ছিলেন ওই মামলায় আর এক ধৃত কুন্তল ঘোষ। তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তলের মুখে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে এ বার চর্চা শুরু হয়েছে। মডেল-অভিনেত্রী সেই হৈমন্তীর ‘নিয়োগ দুর্নীতি’তে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর মায়ের অবশ্য দাবি, তিনি মেয়ের ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ে মারা গিয়েছে!’’
বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয় তাপস, কুন্তলদের। আদালত থেকে বেরোনোর সময়েই কুন্তল দাবি করেন, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতির টাকা হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। হৈমন্তী হলেন গোপাল দলপতির স্ত্রী।’’ তৃণমূল নেতার ওই মন্তব্যের পর হৈমন্তী সম্পর্কে নানা তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। জানা যায়, তাঁর আদি বাড়ি হাওড়ার উত্তর বাকসারা রোডের কাটুরিয়া পাড়ায়। স্থানীয় সূত্রে দাবি, নিজের বাড়িতে মাঝেমধ্যেই আসতে দেখা গিয়েছে হৈমন্তীকে। মডেল-অভিনেত্রী সম্পর্কে জানতে তাঁর বাড়ি যাওয়া হলে মা জানান, ১০-১৫ দিন আগে মেয়ে এসেছিলেন। কিন্তু হৈমন্তী কী করতেন, কোথায় যেতেন, সেই ব্যাপারে তাঁর কোনও ধারণা নেই।
তাঁর কথায়, ‘‘আমায় কেন ডিসটার্ব (বিরক্ত) করছেন? কবে বিয়ে হয়েছিল, জানি না। ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল। হৈমন্তী অনেক কিছুই করত। কিন্তু আমরা কিছুই জানি না। মেয়ের ভালবাসা করে বিয়ে হয়েছিল। আগে গাড়ি আসত। এখন আর কেউ আসে না। মেয়ে মারা গিয়েছে!’’ এ কথা বলতে বলতেই মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেন হৈমন্তীর মা।
সিবিআই সূত্রেও দাবি, মুম্বইয়ের ঠিকানায় আরমান গঙ্গোপাধ্যায় (গোপালের পরিবর্তিত নাম) এবং হৈমন্তীর নামে একটি সংস্থার অ্যাকাউন্টে কয়েক লক্ষ টাকার বেআইনি লেনদেনের সূত্র মিলেছে। হৈমন্তীর কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই তাঁর ব্যাপারে জানতে বৃহস্পতিবার গোপালের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। হৈমন্তীর সঙ্গেও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। হোয়াটসঅ্যাপ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ‘ডিপি’ (ডিসপ্লে পিকচার) বদলে দেন হৈমন্তী। তাতেই রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি অন্তরালেই থাকতে চাইছেন এই ‘রহস্যময়ী’?