Beaten to death

কারখানার সামনেই পিটিয়ে খুন সুপারভাইজারকে! বিশ্বকর্মা পুজোর প্রস্তুতির মধ্যে উত্তেজনা ব্যান্ডেলে

শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, কারখানার ভিতরে বিশ্বকর্মা পুজোর প্রস্তুতি চলছিল। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ কারখানার গেটের বাইরে কিছু লোক আচমকাই তাঁদের সুপারভাইজারকে ধরে মারধর শুরু করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০০
Share:
beaten to death

মৃত পাপ্পু দাস (বাঁ দিকে)। মৃতের স্ত্রী (ডান দিকে) —নিজস্ব চিত্র।

এক দিন পরে বিশ্বকর্মা পুজো। কলকারখানায় শুরু হয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। পুজোয় শ্রমিকদের খাওয়াবেন বলে হোটেলে মাংসের অর্ডার দিয়েছিলেন। সেই শ্রমিকদের কয়েক জনের হাতে খুন হকে হল সুপারভাইজারকে! সোমবার এমনই অভিযোগ উঠল হুগলির ব্যান্ডেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম পাপ্পু দাস। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত হন ওই কারখানার শ্রমিকও। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, কারা পাপ্পুকে খুন করল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তার মধ্যেই জানা গেল শ্রমিকদের একাংশের হাতেই খুন হয়েছেন পাপ্পু।

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় পাপ্পুর বাড়ি। ব্যান্ডেলের সাহেবগঞ্জে জুপিটার কারখানার সুপারভাইজার ছিলেন তিনি। অন্যান্য কাজের দিনের মতো সোমবার সকালেও রেলের যন্ত্রাংশ তৈরির ওই কারখানায় আসেন পাপ্পু। শ্রমিকেরা জানাচ্ছেন, কারখানার ভিতরে বিশ্বকর্মা পুজোর প্রস্তুতি চলছিল। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ কারখানার গেটের বাইরে কিছু লোক আচমকাই পাপ্পুকে ধরে মারধর শুরু করেন। রাস্তায় ফেলে লাথি, কিল মারা হয় তাঁকে। দেখা মাত্রই কয়েক জন শ্রমিক ছুটে যান পাপ্পুকে উদ্ধার করতে। কিন্তু ওই সময় চন্দন দেব নামে এক শ্রমিককেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আততায়ীরা পালিয়ে গেলে আহতদের উদ্ধার করে ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা পাপ্পুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে যায় পুলিশ। শ্রমিকরাও জড়ো হন। মৃত সুপারভাইজারের স্ত্রী আসেন হাসপাতালে। কেন তাঁর স্বামীর উপর হামলা হল, তার কারণ তিনিও জানেন না।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি কারখানার বাইরে হয়েছে। কী কারণে এবং কারা এই ঘটনা ঘটাল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঠিকা শ্রমিকদের সঙ্গে গন্ডগোলের জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে। এখনও এই ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।

Advertisement

জুপিটার কারকাখানার গেটের সামনে জিটি রোড। গেটের বিপরীতেই পুতুল দেবী পাশোয়ানের হোটেল। ঘটনার সময় তাঁর বাবা নন্দলাল মাঝি ছিলেন দোকানে। পুতুল জানান, তিনি সে সময় দোকানে ছিলেন না। বাবা একাই ছিলেন। পাশের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন সুপারভাইজার। কয়েক জন শ্রমিককে টাকা দেন। আরও টাকা দিতে হবে দাবি করেন ওই শ্রমিকেরা। তা নিয়ে তর্ক শুরু হয়। দোকান থেকে বেরিয়ে সামনের চায়ের দোকানের সামনে যেতেই শ্রমিকেরা পাপ্ুকে ঘিরে ধরেন। শুরু হয় মারধর। ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ়েও দেখা যায়, কারখানার গেট থেকে উত্তেজিত কয়েক জন বেরিয়ে আসেন। চড়াও হন সুপারভাইজারের উপর। বস্তুত, সিসিটিভি ফুটেজ়েও সে ছবি দেখা গিয়েছে। পুতুল জানান, অনেক ক্ষণ পরে আরও কয়েক জন শ্রমিক কারখানা থেকে বেরিয়ে এসে পাপ্পুকে উদ্ধার করতে যান। কিন্তু তাঁদেরও কেউ কেউ আক্রান্ত হন। পুতুলের দাবি, ‘‘বিশ্বকর্মা পুজোয় শ্রমিকদের খাওয়াবেন বলে ২০ কিলো মাংসের অর্ডার দিয়েছেন সুপারভাইজার। তাঁদেরই হাতে মারা গেলেন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement