নিশানায় ইন্দ্রনীল, চর্চা চন্দননগরে
Chandannagar

ভোটে চাই স্থানীয় প্রার্থী, ফ্লেক্স ঘিরে শোরগোল

২০১৫ সালের নির্বাচনে চন্দননগর পুরসভার ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পুরসভার অন্দরে ডামাডোল শুরু হয়।

Advertisement

তাপস ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:২৯
Share:

সেই ফ্লেক্স। চন্দননগরে। —নিজস্ব চিত্র।

এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি কোনও দল। তার আগেই স্থানীয় প্রার্থী চেয়ে ফ্লেক্সে ছয়লাপ হল চন্দননগর।

Advertisement

রবিবার শহরের বাগবাজার, গোন্দলপাড়া, তেলেনিপাড়া, সুভাষ পল্লি এবং শহরের উড়ালপুলের আশপাশে নীল-সাদা ওই ফ্লেক্স দেখা গিয়েছে। তাতে হিন্দি ও বাংলায় লেখা— ‘স্থানীয় প্রার্থী চাই’। পাশাপাশি, চন্দননগর পুরসভায় তিন বছর ‘অনাস্থা’ কেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। নীচে লেখা— ‘জনসাধারণ’।

এমন ফ্লেক্স দেখে শহরে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়, কে বা কারা এই ফ্লেক্স লাগাল, তা নিয়ে। এর উত্তর মেলেনি। তবে, যথারীতি শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চাও। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, এটা বিরোধীদের কাণ্ড। বিরোধীরা অবশ্য এর দায় নিতে নারাজ।

Advertisement

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে চন্দননগরে মূল তিনটি দলের প্রার্থীদের মধ্যে একমাত্র তৃণমূল প্রার্থী তথা বর্তমান বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেনই কলকাতার বাসিন্দা। ফলে, বিরোধীদের দাবি এবং এলাকাবাসীর কেউ কেউও মনে করছে, তৃণমূলের অন্তর্কলহের জেরে ওই ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছে।

বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গৌতম চট্ট্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের দলের এমন প্রচারের প্রয়োজন হয় না। তবে জনসাধারণের পক্ষ থেকে যখন এমন আবেদন জানিয়ে ফ্লেক্স পড়ছে, তাতেই বোঝা যাচ্ছে, চন্দননগরবাসী কী চান।’’ সিপিএম নেতা রতন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা এ ভাবে মনেও করি না। বিধায়ক কাজের মানুষ হবেন এবং মানুষের সঙ্গে থাকবেন, এটাই সব থেকে বড় কথা।’’

বিধায়ক তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কারা এই সব নোংরা কাজ করছে, আমার জানা নেই। যারাই করুক না কেন, এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানো ছাড়া তাদের কোনও কাজ আছে বলে তো মনে হচ্ছে না। তবে, এ সব করে কিছুই হবে না। নির্বাচনে এর কোন প্রভাবই পড়বে না।’’ ভেঙে দেওয়া চন্দননগর পুরবোর্ডের মেয়র-পারিষদ তথা বর্তমান বোর্ডের সদস্য মুন্না আগরওয়াল চন্দননগর শহর তৃণমূলের সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘চন্দননগরে এই সংস্কৃতি চলে না। সুপরিকল্পিত ভাবে এ সব করা হচ্ছে বিভ্রান্তি ছড়াতে।’’ আর জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলে প্রার্থী ঠিক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে কারও উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। যাঁদের রাজনৈতিক কাজকর্ম নেই, বিরোধী দলের সেই সব উটকো লোকেরা এ সব করছেন।’’

২০১৫ সালের নির্বাচনে চন্দননগর পুরসভার ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পুরসভার অন্দরে ডামাডোল শুরু হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গড়ায় যে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে পুরবোর্ড ভেঙে দেয় রাজ্য সরকার। পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডুকে পুরসভা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে মনোনীত একটি বোর্ড গড়ে দেওয়া হয়। ভেঙে দেওয়া পুরবোর্ডের কেউ কেউ সেখানে রয়েছে। যদিও, ভোট করা হয়নি। এই নিয়ে বিরোধীরা প্রায়ই অভিযোগ করে থাকেন, অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই পুরসভা চলছে। তৃণমূল শিবিরেও এ নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। সেই প্রশ্নই ফ্লেক্সে উঠে এসেছে বলে অনেকে মনে করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement