জলমগ্ন হুগলির রাস্তাঘাট। —নিজস্ব চিত্র।
গত তিন দিন ধরেই অবিরাম বৃষ্টিতে ভিজছে দক্ষিণবঙ্গ। দিনভর আকাশ মেঘলা, রাতেও বৃষ্টি থামার নাম নেই। আর এর জেরেই জলবন্দি হুগলির একাধিক এলাকা। কোথাও হাঁটুজল, কোথাও আবার রাস্তা উপচে জল ঢুকে পড়েছে বাড়িতেও। ব্যান্ডেল থেকে বৈদ্যবাটি— একই দৃশ্য সর্বত্র।
তিন দিন ধরে হয়ে চলা বৃষ্টিতে জলবন্দি হয়ে পড়েছে হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ড, সুভাষনগর, সারদা পল্লি, লোকোপাড়া, কৈলাশনগর, ক্যান্টিন বাজার, কোদালিয়ার একাংশ। ব্যান্ডেল স্টেশন রোডেও জল জমেছে। সেখানে দোকানের ভিতরে জল ঢুকে যাওয়ায় লাটে উঠেছে ব্যবসা। বিশ্বকর্মা পুজোর প্রাক্কালে দোকানই খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা! বৃষ্টির জেরে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত। জলমগ্ন রাস্তায় চলছে না অটো, টোটোও। জল পেরিয়ে ব্যান্ডেল স্টেশনে পৌঁছতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এর মাঝেই আবার ঝোড়ো হাওয়ায় ব্যান্ডেলে একটি স্কুলের সামনে ভেঙে পড়ে গাছ। চুঁচুড়া পুরসভার কর্মীরা গিয়ে গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করার পরে স্বাভাবিক হয়েছে পরিস্থিতি।
বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে বিশ্বকর্মা পুজোর বাজারেও। চুঁচুড়া রবীন্দ্রনগর বাজারে দেখা গেল, জল থেকে বাঁচাতে প্লাস্টিকে মুড়ে রাখা হয়েছে বিশ্বকর্মার প্রতিমা। ক্রেতা নেই। একই দৃশ্য বৈদ্যবাটিতেও। সেখানে বসতবাড়িতে ঢুকেছে জল। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জোঁকের উপদ্রব। বিঘার পর বিঘা কৃষি জমিও চলে গিয়েছে জলের তলায়। আমন ধানের চারা বসিয়েছিলেন চাষিরা। সেই ফসলের অবস্থা দেখে মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। টানা বৃষ্টির কারণে জলস্তর বেড়েছে একাধিক নদীর। দ্বারকেশ্বরের জলে প্লাবিত হয়েছে আরামবাগ এলাকা।
বৈদ্যবাটির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধান মাঠ সংলগ্ন নতুন পাড়া এলাকায় জলের তলায় চলে গিয়েছে একাধিক ঘরবাড়ি। হাঁটু জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। যদিও বৃষ্টি নয়, বরং বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার দিকেই আঙুল তুলেছেন স্থানীয়েরা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে যায় রাস্তায়। জলের মধ্যেই ঘুরে বেড়ায় সাপ, জোঁক। ভয়ে ভয়ে বাস করতে হচ্ছে তাঁদের। স্থানীয়দের দাবি, সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থার। যদিও বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার কথা স্বীকার করেছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তাঁর কথায়, সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা না থাকার জন্য দায়ী কৃষকেরাই। বার বার তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা হলেও তাঁরা কেউ আসেননি।