সমীক্ষকদের সঙ্গে ওয়ালশ হাসপাতালের লোকজন। — নিজস্ব চিত্র।
পরিকাঠামো এবং পরিষেবার মানে সন্তুষ্ট কেন্দ্র। তারই শংসাপত্র (ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওর্যান্স স্ট্যান্ডার্ড) পেল হুগলির শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতাল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের তরফে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে পাঠানো চিঠিতে বিষয়টি জানিয়েছে।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইঞা জানান, এই শংসাপত্রের ফলে ওয়ালশে শয্যাপিছু বছরে ১০ হাজার টাকা দেবে কেন্দ্র। আগামী তিন বছর এই অর্থ মিলবে। ওয়ালশের সুপারিন্টেন্ডেন্ট প্রণবেশ হালদারের কথায়, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে অর্থের অভাবে নানা পরিকল্পনা কার্যকর করতে সময় লাগে। ওই টাকা পেলে সেই কাজ সহজ হবে। পরিষেবার মান আরও বাড়বে।’’
রাজ্যের দ্বিতীয় প্রাচীন হাসপাতাল ওয়ালশ তৈরি হয়েছিল শ্রীরামপুরে ডেনমার্কের উপনিবেশের সময়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, জরুরি, বহির্বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার, এসএনসিইউ, প্রসূতি, ব্লাডব্যাঙ্ক, প্রভৃতি ১৭টি বিভাগে গত ১১ থেকে ১৩ মে সমীক্ষা করেন কেন্দ্রীয় তিন সমীক্ষক। সবেতেই নম্বর শতকরা ৯০ বা তার বেশি। হাসপাতাল প্রশাসন, খাবার, পরিচ্ছন্নতা— এই বিষয়গুলিও দেখা হয়। চিকিৎসক, নার্সদের জ্ঞান, সরঞ্জাম, ওষুধের সরবরাহ, কর্মবন্ধু অর্থাৎ সাফাইকর্মীদের কাজও সমীক্ষায় দেখা হয়েছে।
হাসপাতালের পুরনো ভবনের পাশেই কয়েক বছর ধরে চলছে সুপার স্পেশালিটি ভবন। হাসপাতালের এক কর্তার বক্তব্য, সুপার স্পেশালিটির ঝাঁ-চকচকে পরিবেশ রয়েছে। তবে, ‘কর্পোরেট লুক’ থাকলেই তো হয় না, পরিষেবা মূল। রোগী কী পরিষেবা পাচ্ছেন, রোগীর অধিকার, তাঁর সন্তুষ্টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই ক্ষেত্রেও সসম্মানে পাশ। শংসাপত্রের ‘লক্ষ্য’ বিভাগে প্রসূতি অপারেশন থিয়েটার এবং লেবার রুমের ক্ষেত্রেও ৯০% নম্বর মিলেছে। ওয়ালশ কর্তৃপক্ষের দাবি, হুগলির বড় হাসপাতালের মধ্যে জাতীয় এই শংসাপত্র প্রথম। উন্নততর পরিকাঠামো ও পরিষেবা চলমান প্রক্রিয়া। তা বজায় রাখার চেষ্টা হবে। ওয়ালশের ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত পৃথকীকরণের ব্যবস্থা নেই। কর্তৃপক্ষ জানান, এ জন্য নির্দিষ্ট নম্বর কাটা গিয়েছে। তবে ব্লাডব্যাঙ্কের অন্য বিষয়ের সমীক্ষায় কেন্দ্রীয়দল সন্তুষ্ট।
হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ ওঠে না, এমন নয়। পরিকাঠামো বাড়ানোর দাবিও রয়েছে। কয়েক মাস আগে কংগ্রেসের তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হয় নানা দাবিতে। হাসপাতালের দাবি, সুপার স্পেশালিটি হওয়ার পরে অনেক বেশি মানুষ বহু গুণে ভাল পরিষেবা পাচ্ছেন। রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘পরিষেবা কেমন, কেন্দ্রীয় শংসাপত্রেইপ্রমাণিত। সেরা পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টাই চালানো হবে।’’
‘ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওর্যান্স স্ট্যান্ডার্ড’ শংসাপত্র পেয়েছে চন্দননগরের ‘শহর প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্র’ও (আরবান প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার বা ইউপিএইচসি)। চন্দননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) শুভজিৎ সাউ জানান, এই কেন্দ্র সার্বিক ভাবে ৮৯.৮% নম্বর পেয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘ইউপিএইচসি হিসাবে হুগলিতে আমরাই প্রথম এইশংসাপত্র পেলাম।’’