ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের অবস্থান-বিক্ষোভ। আরামবাগের হরিণখোলায়। নিজস্ব চিত্র
বেশ কিছুদিন ধরে আরামবাগের হরিণখোলায় একটি বহুমুখী হিমঘরের ফেলে দেওয়া পচা আলু ও পেঁয়াজ থেকে দুর্গন্ধ এবং দূষণে জেরবার হচ্ছিলেন সকলে। শুক্রবার সকালে ওই হিমঘর সংলগ্ন নবাসন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছোট ছোট পড়ুয়ারা প্রতিবাদে পথ অবরোধ করায় টনক নড়ল প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের। তাদের নির্দেশ মতো ওই সব বর্জ্য মাটি চাপা দিয়ে ব্লিচিং পাউড়ার ছড়ানো শুরু করলেন হিমঘর কর্তৃপক্ষ।
ওই স্কুল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল মাস থেকেই ওই হিমঘরের ফেলে দেওয়া নষ্ট আলু এবং পেঁয়াজ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দুর্বিষহ অবস্থা হয়। এ দিন সকাল ১১টা থেকে স্কুলটির ছাত্র-ছাত্রীরা প্রথমে হিমঘরের মূল ফটকের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করে। তাতে শিক্ষক, অভিভাবক এবং গ্রামবাসীরাও
শামিল হন। সেখানে এক ঘণ্টার অবস্থান-বিক্ষোভে হিমঘর থেকে কোনও সাড়া মেলায় গ্রামবাসী এবং অভিভাবকেরা প্রশাসনের টনক নড়াতে পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের নিয়ে পাশেই আরামবাগ-চাঁপাডাঙা রাজ্য সড়ক (২ নম্বর) অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ, ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা গিয়ে আগামী দু’দিনের মধ্যেইওই দুর্গন্ধ এবং দূষণ দূর করার আশ্বাস দিলে আধ ঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে।
প্রধান শিক্ষক শৈলেন্দ্রনাথ সীট বলেন, “এমনই দুর্গন্ধ যে, মিড-ডে মিল খেতে গিয়ে বমি করে করে ফেলছিল পড়ুয়ারা। মশা-মাছিতে ভর্তি। বিষয়টা হিমঘর কর্তৃপক্ষ, পঞ্চায়েত প্রধান, স্কুল পরিদর্শক থেকে শুরু করে ব্লক এবং জেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সাড়া না মেলায় ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগেই এই আন্দোলন করতে বাধ্য হলাম আমরা।”
আরামবাগ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক সুজন দে বলেন, “বিষয়টার সমাধানে পঞ্চায়েত প্রধানকে তদারকি করতে বলা হয়েছে। কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।” হরিণখোলা ১ পঞ্চায়েতটির স্কুলের পাশেই। প্রধান পার্থ হাজারী বলেন, “হিমঘর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে গর্ত করে বর্জ্য পুঁতে দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। সংলগ্ন চত্বরে ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। শনিবারের মধ্যেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
কিন্তু এতদিন পদক্ষেপ করা হয়নি কেন? ব্লক প্রশাসন এ প্রশ্নে মুখ খোলেনি। তবে, প্রধানের দাবি, ‘‘হিমঘর কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল। ওঁরা কিছু বর্জ্য মাটি চাপা দিয়েছিলেন। তা ফের বৃষ্টির জলে ফুটে উঠেছে।’’ হিমঘরটির ম্যানেজার রবিপ্রকাশ সিংহ বলেন, “কাজটা শুরু করতে একটু দেরি হয়ে গেল। এখন জোরকদমে চলছে।”