হাওড়ার কোনা নস্করপাড়ায় এই পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছিল। —নিজস্ব চিত্র।
পুর প্রশাসনকে একাধিক বার জানানো সত্ত্বেও সমস্যার সুরাহা না হওয়ায় এ বার এলাকার
বাসিন্দারাই পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন। রবিবার সকালে তাঁদের বিক্ষোভ-আন্দোলন ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল হাওড়া পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কোনা নস্করপাড়ায়। খবর পেয়ে লিলুয়া থানার পুলিশ এলে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা তাদের কাছে পুকুরটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিও তোলেন। শেষে পুলিশ আধিকারিকেরা আইনানুগ পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি ত্রিলোকেশ মণ্ডলও বাসিন্দাদের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন।
কোনা নস্করপাড়ায় একটি ক্লাবের পাশে প্রায় এক বিঘার ওই পুকুরটিতে এক বছর আগেও জল টলটল করত। স্নান থেকে শুরু করে দৈনন্দিন নানা কাজে সেটি ব্যবহার করতেন বাসিন্দারা। পুকুরে হত মাছ চাষও। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাস ছয়েক আগে দেখা যায়, পুকুরের পাশে থাকা পুরসভার ভ্যাটটি ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং পুকুরেই যাবতীয় আর্বজনা ফেলা হচ্ছে। প্রথমে বাসিন্দাদের কয়েক জন আপত্তি করলেও স্থানীয় দুই দুষ্কৃতী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় কেউ সাহস করে আর এগোননি।
বাসিন্দারা জানান, গত ছ’মাসের মধ্যে রাতের অন্ধকারে তো বটেই, এমনকি দিনেও লরি করে মাটি এনে পুকুরটির চার পাশ থেকে ফেলতে শুরু করা হয়। তখন স্থানীয় লোকজন বিষয়টি প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানান। কিন্তু অভিযোগ, কোনও তরফ থেকেই ব্যবস্থা
নেওয়া হয়নি। এর পরেই এ দিন সকালে এলাকার পুরুষ ও মহিলারা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
এলাকার বাসিন্দা ভোলা চৌধুরী বলেন, ‘‘এই অঞ্চলে এটাই একমাত্র পুকুর। এটি বোজানোর আগে প্রথমে ভ্যাটটি ভেঙে ফেলা হয়। তার পরে ধীরে ধীরে আর্বজনা ফেলে পুকুর বোজানো শুরু হয়। গোটা ঘটনাটি পুরসভা ও স্থানীয় নেতাদের জানানো হয়েছিল। কিন্তু কেউ কিছু করেননি। বাধ্য হয়ে আজ আমরা পথে নেমেছি।’’ দীপালি সামন্ত নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘‘গত ২০ বছর ধরে এই পুকুরের জল এলাকার লোকজন ব্যবহার করছেন। পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতেই হবে প্রশাসনকে।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগকে পুরোপুরি সমর্থন করেছেন প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি ত্রিলোকেশও। তিনি বলেন, ‘‘পুকুর বোজানোর খবর এলাকার বাসিন্দারা আমায় আগে জানাননি। ওঁদের বলেছি, পুকুর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’’
হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এলাকার লোকজন আজই আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার পুর আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হবে। তাঁদের থেকে রিপোর্ট পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’