— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রেললাইনের ধারে পড়ে থাকা অসুস্থ এক প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে ট্রেনে তোলা হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট স্টেশনে নামানো হয়নি বলে অভিযোগ। প্রান্তিক স্টেশনে নামিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় এই ঘটনায় রেলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাওড়া-আমতা শাখার বড়গাছিয়া স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। তাঁদের দাবি, ওই স্টেশনে নামিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হলে বাঁচানো যেত।
রেল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানেননি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওমপ্রকাশ চরন বলেন, ‘‘ডাঁশি স্টেশন থেকে একটি মৃতদেহ ট্রেনে তোলা হয়। পুলিশকে জানিয়ে আমতা স্টেশনে নামিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বড়গাছিয়ায় নামানোর বিষয়টি কেউ ভুল খবর ছড়িয়েছিল।’’ যাত্রীদের অবশ্য দাবি, ট্রেনে তোলার সময়ে ওই প্রৌঢ় জীবিত ছিলেন।
রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় (৫৫)। বাড়ি হুগলির জাঙ্গিপাড়ায়। তিনি হাওড়ার অঙ্কুরহাটির একটি সংস্থায় কাজ করতেন। প্রতি দিন বড়গাছিয়া থেকে লোকাল ট্রেনে ডাঁশি স্টেশনে নেমে কাজে যেতেন। কাজ শেষে একই পথে ফিরতেন। সোমবার ডাঁসিতে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের আমতাগামী লোকাল ধরতে আসার সময়ে কয়েক জন যাত্রী রেললাইনের ধারে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখে তুলে স্টেশনে নিয়ে গিয়ে চোখেমুখে জল দেন।
তাঁদের দাবি, ট্রেন এলে গার্ডের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে ট্রেনে তোলা হয়। এক নিত্যযাত্রী জানান, গার্ডের সঙ্গে কথা বলে প্রথমে ঠিক হয়েছিল, তাঁকে ডোমজুড়ে নামানো হবে। পরে বড়গাছিয়ায় নামানোর কথা হয়। ট্রেন বড়গাছিয়ায় এলে স্টেশন মাস্টারের অফিসে গিয়ে গার্ড বিষয়টি জানান। স্টেশন কর্তৃপক্ষ এক রেলকর্মীকে পাঠান বিষয়টি দেখতে। অভিযোগ, ট্রেনটি প্রায় ১৫ মিনিট দাঁড়ানোর পরেও তাঁকে না নামিয়েই চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী এক নিত্যযাত্রী বলেন, ‘‘কেন এমন হল, জানতে আমরা স্টেশন মাস্টারের কাছে যাই। উনি জানান, সিগনাল পেয়ে ট্রেনটি ছেড়ে চলে গিয়েছে।’’ এরপরেই বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, একেই বড়গাছিয়ায় ট্রেন মিনিট পনেরো দাঁড়িয়েছিল। তারপরে বড়গাছিয়া থেকে আমতা যেতে প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লাগে। সব মিলিয়ে অন্তত পঁয়তাল্লিশ মিনিট সময় নষ্ট হয়েছে। ওই ব্যক্তিকে বাঁচাতে বড়গাছিয়ায় নামিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো উচিত ছিল বলে মনে করছেন তাঁরা।
ইতিমধ্যেই যাত্রীদের কাছে খবর পেয়ে বিশ্বজিতের বাড়ির লোকেরা বড়গাছিয়ায় আসেন। বিশ্বজিৎকে নিয়েই ট্রেন আমতায় গিয়েছে শুনে তাঁরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রেল কর্তৃপক্ষ জানান, জানান, ওই প্রৌঢ় কতক্ষণ রেললাইনের ধারে পড়েছিলেন, জানা যায়নি। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের এক আধিকারিক জানান, আমতা হাসপাতাল থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়।