হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনের বাইরে শ্রী মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ। শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
ভোট বড় বালাই! আর বোধহয় সেই কারণেই শুক্রবার, হাওড়া ময়দান থেকে মেট্রো পরিষেবা শুরু হওয়ার ঐতিহাসিক দিনেও দখলদারির পুরনো ছবিটা বদলাল না। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সামনেই যে হেতু নির্বাচন, তাই এখনই হকার উচ্ছেদের মতো কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। আপাতত কিছু হকারকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, চুক্তি অনুযায়ী শ্রী মার্কেটের পুরনো জায়গায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ নতুন ভবন তৈরি করে না দেওয়ায় মেট্রো পরিষেবা শুরুর দিনেই মহাত্মা গান্ধী রোড থেকে মিছিল করে এসে বিক্ষোভ দেখালেন ব্যবসায়ীরা।
হাওড়া ময়দান এলাকার ফুটপাত ও রাস্তা থেকে জবরদখলকারীদের হটানোর বিষয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি প্রশাসনের তরফে। বেআইনি ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, বাস স্ট্যান্ড এবং পার্কিং লট সরানোর কোনও রূপরেখা তৈরির উদ্যোগও দেখা যায়নি জেলা প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যে। যাত্রী-পরিষেবা শুরুর দিনেও শুধু এক নম্বর গেটের সামনে থেকে বেআইনি বাস স্ট্যান্ড সরিয়ে পিছনের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং স্টেশনের গেটের সামনে রাস্তার কিছুটা অংশে বাস যাতে না দাঁড়ায়, সে জন্য ঘিরে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এ দিনও দেখা গিয়েছে, দু’নম্বর গেটের মুখে ও বাইরের ফুটপাতে দখলদারেরা বসে আছেন। হকারদের রাস্তায় ডালা নিয়ে বসাও আটকাতে পারেনি পুলিশ। ওই সঙ্কীর্ণ পথ ধরেই কোনও মতে যাতায়াত করতে হচ্ছে মেট্রোযাত্রীদের। সন্ময় বসু নামে এক মেট্রোযাত্রী বললেন, ‘‘আমি তো ভেবেছিলাম, হাওড়ায় মেট্রো চালু হলে ময়দানের ছবিটাই বদলে যাবে। কিন্তু কিছুই তো হল না।’’
হাওড়া ময়দান দখলদারমুক্ত করা গেল না কেন? হাওড়া সিটি পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘আমরা এখনই কোনও উচ্ছেদের মধ্যে যাচ্ছি না। কিছু হকারকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের পরে বাকিদেরও ধীরে ধীরে সরানো হবে।’’
এ দিকে, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, নিজেদের পুরনো জায়গায় নতুন স্টল না পেয়ে এ দিন হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো ব্যবসায়ী। ‘শ্রী মার্কেট হকার্স কর্নার ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিষেবা চালু হওয়ার আগেই পুরনো জায়গায় মার্কেট তৈরি করে দেওয়া হবে বলে চুক্তি করেছিল মেট্রো রেল। তাই আন্দোলন চলবে।’’