প্রতীকী চিত্র।
প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো না-থাকার কারণে অতিমারির প্রথম দু’টি ঢেউ মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালগুলির উপরে অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়েছিল হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে। তার জন্য মোটা অঙ্কের বিল মেটাতে হয়েছিল তাদের। এখন চোখ রাঙাচ্ছে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ। তা এলে যাতে বেসরকারি হাসপাতালের উপরে নির্ভরতা কমানো যায়, সে জন্য জেলার সরকারি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিল স্বাস্থ্য দফতর। তারই অঙ্গ হিসেবে ওই হাসপাতালগুলিতে তৈরি হয়েছে অক্সিজেনের ব্যবস্থা সম্বলিত ১১৬০টি শয্যা। সেই সঙ্গে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টিএল জয়সওয়াল এবং বালিটিকুরি ইএসআই কোভিড হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর কাজ শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য ধরে নিয়ে এর মোকাবিলায় বুধবার প্রতিটি ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ পদস্থ অফিসারেরা। হাওড়া শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার হাসপাতালগুলির পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। পরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালের উপরে নির্ভরতা কমাতে চাইছি। তাই জেলার অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে পাইপলাইনের মাধ্যমে রোগীদের শয্যায় অক্সিজেন পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সিসিইউয়ে শয্যা সংখ্যা। বর্তমানে হাওড়ায় সিসিইউ-শয্যা রয়েছে ৯৫টি। তৈরি হয়েছে পেডিয়াট্রিক কেয়ার ইউনিটও।’’ তিনি জানান, জেলার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে হাওড়া জেলা হাসপাতালে কোভিডের জন্য ৯০টি সাধারণ শয্যা এবং এইচডিইউ, সিসিইউ ও পেডিয়াট্রিক সিসিইউ মিলিয়ে ২৫টি শয্যা রাখা হয়েছে। তবে এখনই ওই হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসছে না। টিএল জয়সোয়াল হাসপাতালে কোভিডের জন্য রয়েছে ২০০টি শয্যা, ১০টি শয্যা রয়েছে সিসিইউয়ে। সত্যবালা হাসপাতালে রয়েছে ৫০টি শয্যা। প্রতিটি শয্যায় অক্সিজেন পাঠানোর জন্য পাইপলাইন বসানো হয়েছে। এ ছাড়া বালিটিকুরি ইএসআই কোভিড হাসপাতালে ৪০০টি সাধারণ শয্যা ও ৫০টি সিসিইউ-শয্যা প্রস্তুত। ওই হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসাতে দিল্লি থেকে যন্ত্র আনা হচ্ছে।
এর পাশাপাশি হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় সরকারি হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন পাইপলাইন বসিয়ে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ২০০টি সাধারণ শয্যার পাশাপাশি ১০টি সিসিইউ-শয্যা, উদয়নারায়ণপুর, গাববেড়িয়া ও একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২০টি করে মোট ৬০টি শয্যা, উলুবেড়িয়া ইএসআইয়ে ১০০টি শয্যা এবং বেলুড় ইএসআই হাসপাতালে ৬০টি কোভিড-শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।