ভুরকুণ্ডা গ্রামের এই বাড়ি নিয়েই বিতর্ক। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
পরিবারের দোতলা পাকা বাড়ি আছে। মোটরবাইকও আছে। তারপরেও গোঘাট-২ ব্লকের কুমারগঞ্জের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সাদরুদ্দোজা ওরফে রাহুলের স্ত্রী এবং দাদার নামেআবাস প্লাসে পৃথক দু’টি বাড়ির অনুমোদন মেলায় শোরগোল পড়েছে এলাকায়। বিড়ম্বনায় পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
বাড়িটি ওই পঞ্চায়েতের ভুরকুণ্ডা গ্রামে। রাহুল ও তাঁর ভাইরা সপরিবারে ওই বাড়িতেই থাকেন বলে এলাকাবাসীর দাবি। আবাস প্লাসে যে সব গ্রামবাসীর নাম ওঠেনি তাঁরা ওই অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মধ্যে হাসান চৌধুরী নামে একজনকে মারধর এবং বাকিদের হুমকি দেওয়ারও অভিয়োগ উঠেছে রাহুল ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে। রাহুল অভিযোগ মানেননি।
হাসানের অভিযোগ, “আমি একই দলের বুথ কর্মী। বাড়ি নেই, দিনমজুরি করি। নাম তালিকা থেকে বাদ গেল। অথচ, গ্রামের ওই বনেদি পরিবারের দু’জনের নামে কী করে বাড়ি অনুমোদন হল, সেই প্রশ্ন তোলায় ওঁরা (রাহুল ও তাঁর ভাইরা) আমাকে বাজারে মারধর করেছেন। তারপর আর প্রতিবাদ করতে সাহস হয়নি। কিন্তু দলকে জানিয়েছি।”
ইতিমধ্যেই তৃণমূলের একাংশ বিডিও-র কাছে রাহুলের স্ত্রী-দাদার বাড়ি পাওয়ার যোগ্যতা খতিয়ে দেখতে আবেদন করেছেন। ওই অঞ্চলেরই বাসিন্দা, তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল রায় বলেন, “এ রকম হয়ে থাকলে রাহুলের স্ত্রী নিশ্চিত ভাবেই বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন। অনুপযুক্তদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে যাঁরা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য তাঁদের দেওয়া হোক বলে ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি। এই অঞ্চলে মোট ৮৬ জনের নাম নিয়ে বিতর্ক আছে বলে ব্লক প্রশাসনের কাছে জেনেছি।” দলের ব্লক সভাপতি অরুণকুমার কেওড়া বলেন, ‘‘রাহুলরা আবাস প্লাসের ১৫ দফা মাপকাঠির আওতায় না থাকলে নিশ্চিত ভাবেই তাঁর স্ত্রী-দাদার নাম কাটার সুপারিশ করব।”
রাহুল পাল্টা দাবি করেছেন, “আমার স্ত্রী-দাদা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য। পাকা বাড়ি, সম্পত্তি সবই বাবা-মা’র নামে। আমরা ৬ ভাই আলাদা থাকি। আমি এক বিঘা জমির মালিক। ভাইদের আছে ১৬-১৭ কাঠা করে। আমাদের যা আর্থিক অবস্থা, তাতে আমি এবং ভাইরা বাড়ি পেতে পারি।’’ মোটরবাইকটি তিনি চালালেও সেটির মালিক তাঁর এক ভাই বলেও দাবি করেছেন রাহুল। একই দাবি রাহুলের দাদারও।
বিডিও দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “লিখিত অভিযোগ না এলেও বিষয়টা আমার কানে এসেছে। তদন্ত করে দেখা হবে। ওই নামে বাড়ি অনুমোদন হলে এবং তিনি পাওয়ার অযোগ্য হলে টাকা ছাড়া হবে না।”
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, কুমারগঞ্জে আবাস প্লাসে মোট ৮৩৫ জনের নাম অনুমোদন হয়েছে। ওই তালিকায় ৭০২ নম্বরে রাহুলের স্ত্রী এবং ৫১২ নম্বরে রাহুলের দাদার নাম আছে।