হতবাক: এই বাড়ির টাইলস নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি দেখতে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। একটি বাড়িতে ঘরের মেঝেয় তারা দেখল, ঝকঝকে টাইলস বসানো। প্রশ্ন করতেই কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের অবাক করে গৃহকর্তা ধানু দাসের দাবি, ‘‘আবাস প্রকল্পের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় সব হয়ে ওঠেনি। নিজের পকেট থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ঢালতে হয়েছে।’’
ওই টাকা পেলেন কোথায়? মাঝবয়সি ধানু জানান, তিনি রাজমিস্ত্রি সরবরাহের ঠিকাদার। নিজের রোজগার থেকেই ওই টাকা খরচ করেছেন।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে দেখতে দিল্লির দুই প্রতিনিধি রবিবার এসেছিলেন হুগলির জাঙ্গিপাড়া ব্লকের রাধানগর পঞ্চায়েত এলাকায়। সেই পরিদর্শনেরই কিছু মুহূর্ত কাটল ধানুর বাড়িতে।
এ দিন সকালে প্রথমে জাঙ্গিপাড়ার কোতলপুর পঞ্চায়েতে আসে দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় দলটি। বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের জবকার্ড, ব্যাঙ্কের পাশবই খতিয়ে দেখা হয়। এই পঞ্চায়েতের গণেশবাটী এলাকার আবাস যোজনার পাঁচটি বাড়ি পরিদর্শন করেন ওই দুই আধিকারিক। উপভোক্তাদের ছবি তোলেন। শৌচালয়, রান্নার গ্যাস, পানীয় জলের ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন। তাঁরা কী ভাবে এবং কত টাকা বাড়ি তৈরির জন্য পেয়েছেন, তা জিজ্ঞেস করেন। বাড়ি করতে বেশি টাকা খরচ হলে, তা কী ভাবে জোগাড় করেছেন, তারও হিসেব চাওয়া হয়। এক উপভোক্তা জানান, প্রকল্পের টাকায় বাড়ি তৈরি করা সম্ভব হয়নি। নিজে ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন।
কেন্দ্রীয় দলটি পরে রাধানগরে যায়। এখানকার সোমনগরে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকায় রাস্তা এবং নালা সংস্কারের কাজ দেখেন ওই আধিকারিকরা। ধানু-সহ পাঁচ জনের আবাস যোজনার বাড়ি খতিয়ে দেখেন। দু’টি পঞ্চায়েতেই দেখা যায়, আবাস যোজনার বেশ কয়েকটি বাড়িতে শৌচালয়ের দুর্দশা। টাকার অভাবে কেউ শৌচাগার তৈরি করতে পারেনি। ওই দলের সঙ্গে পঞ্চায়েতের কর্মী এবং স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের মোটরবাইক নিয়ে দেখা যায়।
পরিদর্শন নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁরা জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।