পড়েছে এই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
গুঞ্জন ছিল। বিধায়ক রত্না দে নাগ অভিযোগও তুলেছিলেন। এ বার তাঁর সই জাল করে পান্ডুয়ার ইটাচুনা বিজয়নারায়ণ মহাবিদ্যালয়ে তৃণমূলের ছাত্রনেতা সম্বুদ্ধ দত্তের সভাপতি হওয়ার অভিযোগে পোস্টারও পড়ল। রবিবার কলেজ গেটের সামনে, আশপাশে বিভিন্ন জায়গায় ‘ইটাচুনা খন্যান অঞ্চল তৃণমূল’-এর নামে লেখা ওই পোস্টার দেখে শোরগোল পড়ে।
পোস্টারে লেখা, ‘এই এলকার জ্ঞানীগুণী মানুষদের বঞ্চিত করে বাইরে থেকে অযোগ্য লোক এনে কলেজের গভর্নিং বডি তৈরি করা মানছি না’। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চর্চা শুরু হয়েছে।
ইটাচুনা-খন্যান অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মানব সুরের দাবি, পোস্টার কারা মেরেছে, তাঁর জানা নেই। আজ, সোমবার দলীয় বৈঠক করে অনুসন্ধানের চেষ্টা করবেন। ব্লক তৃণমূল সভাপতি সঞ্জয় ঘোষের বক্তব্য, ‘‘আমাদের কেউ এমন পোস্টার সেঁটেছে বলে মনে হয় না। আমাদের দলের বদনাম করতে এটা বিরোধী দলের চক্রান্ত।’’ বিরোধীরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে শাসকদলকে তুলোধোনা করেছেন।
চন্দননগরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির ঘটনায় ধৃত সম্বুদ্ধ বর্তমানে হাজতে রয়েছেন। ফলে, ইটাচুনা কলেজে পোস্টার নিয়ে তাঁর মন্তব্য জানা যায়নি। অধ্যক্ষ গৌতম বীট কোনও মন্তব্য করেননি। মাস দেড়েক আগে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি পদ থেকে সম্বুদ্ধকে সরানো হয়।
পোস্টার নিয়ে বিধায়ক রত্না কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমার যা অভিযোগ, লিখিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছি। তাঁদের বিচারের আশায় আছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য, ‘‘হাত কাটা, লাল চুল, কানে দুল এই কর্মীদের নিয়েই তৃণমূলের করবার। এই সম্পদগুলিকে সরিয়ে দিলে তৃণমূলে নবজোয়ার আসবে কী করে! এদের নিয়েই সই জাল, চুরি করা চলে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই দলের কাপ্তান। তৃণমূল ছাত্র পরিষদও এই ধরনের উপাদানে ভর্তি। তাই ওদের বিধায়ক অভিযোগ করলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’
পান্ডুয়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ করে দিয়েছে তৃণমূল। বিরোধীদের খেয়েদেয়ে কাজ নেই যে, দুর্নীতিতে নিমজ্জিত দলের বিরুদ্ধে বেনামে পোস্টার মারবে! আমরা বলছি, সই জাল করা নিয়ে বিধায়ক নিজে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করুক। দোষীর শাস্তি হোক।’’
দীর্ঘদিন পরিচালন সমিতি ছাড়াই ওই কলেজ চলেছে। কলেজ সূত্রের খবর, তাতে কলেজ পরিচালনায় কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়। পরিস্থিতি এমন হয়, কয়েক মাস আগে অধ্যক্ষ ইস্তফাপত্র পাঠান। এর পরেই সম্বুদ্ধকে সভাপতি করে পরিচালন কমিটি গঠিত হয় শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায়। রত্নার অভিযোগ, তাঁর সই জাল করে সম্বুদ্ধ ওই পদে বসেছেন। তিনি সভাপতি পদে গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদারের নাম সুপারিশ করেছিলেন। সম্বুদ্ধের নাম সুপারিশ করেননি।