পিকনিক স্পটে পৌঁছানোর আগে গাড়ি থেকে ডিজে নাভির নিচে পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
পুলিশের তৎপরতায় বুধবার, পয়লা জানুয়ারি বক্সের ‘সন্ত্রাস’ থেকে মুক্তি পেল গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা।
এ বার গ্রামীণ হাওড়ায় রাস্তায় বা চড়ুইভাতির জায়গায় ডিজে বক্স নিয়ে সচেতনতায় ফ্লেক্স লাগায় পুলিশ। পর্যটন কেন্দ্র বা চড়ুইভাতির জায়গায় নজরদারি চালায়। বুধবার এক ধাপ এগিয়ে উলুবেড়িয়ার নরেন্দ্র মোড়ে মুম্বই রোডে গড়চুমুক ও গাদিয়াড়া পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার পথে চড়ুইভাতি দলের গাড়ি থেকে বক্স নামিয়ে নিলেন পুলিশকর্মীরা। বক্স ফেরত দেওয়া হয়েছে ফেরার সময়।
পুলিশের এই ভূমিকায় খুশি সাধারণ মানুষ। এক মোটরবাইক আরোহীর কথায়, ‘‘ট্রেকার বা ছোট গাড়িতে ডিজে চালিয়ে নাচতে নাচতে আসার সময় বিপদ ঘটতে পারে। ডিজের আওয়াজে গাড়ির হর্ন শোনা যায় না। বক্স নামিয়ে পুলিশ ঠিক করেছে।’’ পুলিশের কড়াকড়িতে অনেকে বক্সের গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়। বসিরহাট থেকে গড়চুমুকে যাওয়ার পথে এক যুবক বলেন, ‘‘পুলিশ ডিজে বক্স নামিয়ে নিচ্ছে। গাড়ি ঘুরিয়ে নিচ্ছি। অন্য কোথাও পিকনিক করবো।’’ গড়চুমুকে খেলনা বিক্রেতা মধু বাগ বলেন, ‘‘অন্যান্য বার ডিজের শব্দে কথা শোনা যায় না। পশুপাখিদের সমস্যা হয়। পুলিশ ভালই করেছে।’’
জেলা পুলিশ সুপার সুবিমল পাল বলেন, ‘‘ডিজে মারাত্মক শব্দ দূষণ করে। বিশেষত ছোটদের, বয়স্কদের সমস্যা হয়। বহু বার সতর্ক করা হলেও অনেকে শুনছিল না। তাই কড়া পদক্ষেপ করা হল।’’
ডিজের বিরুদ্ধে গত চার বছরের পুলিশি অভিযানের ফল মিলেছে হুগলির আরামবাগ মহকুমায়। পয়লা জানুয়ারিতেও এখানে ডিজের অভিযোগ মেলেনি। পিকনিক স্পট বা পর্যটন কেন্দ্রে মদ্যপান আটকাতেও পুলিশ সক্রিয় ছিল। এসডিপিও (আরামবাগ) সুপ্রভাত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে গোঘাটের গড় মান্দারণ পর্যটন কেন্দ্র-সহ বিভিন্ন পিকনিক স্পটে অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে ধরা হয়। এসডিপিও জানান, ডাক্তারি মদ্যপানের প্রমাণ মিললে গ্রেফতার করা হবে। খানাকুলের রাজা রামমোহন রায়ের আমবাগানেও পুলিশি নিরাপত্তা ছিল। আরামবাগের চাঁদুর বনভূমিতে চড়ুইভাতি নিষিদ্ধ। সেখানে যাতে চড়ুইভাতির দল ঢুকতে না পারে, সে জন্য পুলিশ টহল দিয়েছে।
পোলবার বিভিন্ন চড়ুইভাতি উদ্যানে পুলিশের নজরদারিতে ডিজে বক্স বাজেনি। তবে মগরা থেকে পান্ডুয়া জিটি রোড ধরে সাত-আটটি ট্রাক্টরে ১৫-১৬টি মাইক বেঁধে তারস্বরে গান বাজিয়ে চড়ুইভাতি দল গিয়েছে। গুপ্তিপাড়াতেও একই দৃশ্য। এখানে মাইক ছিল মোটরভ্যানে। কুন্তীঘাটের গোপালপুর লকগেট এলাকায় তারস্বরে বক্স বেজেছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, বক্স বন্ধ করতে বলায় দু’টি দল কালনার দিকে চলে যায়। গোপালপুরেও ডিজে বক্স বন্ধ করা হয়।
বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক গৌতম সরকার জানান, মঙ্গলবার বর্ষবরণের রাতে উত্তরপাড়া, ডানকুনি, কোন্নগর, শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি, ভদ্রেশ্বর, চন্দননগর, চুঁচুড়া ইত্যাদি নানা এলাকা থেকে ডিজে বা জেবিএল বক্স বাজার অভিযোগ আসে তাঁদের কাছে। দুপুরে শ্রীরামপুরের বটতলায় জিটি রোড দিয়ে তারস্বরে বক্স বাজিয়ে একটি গাড়িকে যেতে দেখা গেল।