ফাইল চিত্র।
সরকারি পরিষেবা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যে সব অস্থায়ী শিবির হচ্ছে, সেখানে অস্বাভাবিক হারে ভিড় করছেন মানুষজন। যা নিয়ে বার বার বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে হাওড়া জেলা প্রশাসনকে। কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন আবেদনকারীরা, কোথাও আবার ভিড়ে ধাক্কাধাক্কির জেরে পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এই অবস্থা সামাল দিতে এ বার বিভিন্ন স্কুলবাড়ি ভাড়া নিয়ে দুয়ারে সরকারের স্থায়ী শিবির করার সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সপ্তাহে দু’বার বা তারও বেশি দুয়ারে সরকারের শিবির করা হচ্ছে। সেখানে খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্পে হাজার হাজার মানুষ আবেদন করছেন। কিন্তু এমন প্রতিটি শিবিরেই দীর্ঘ লাইন হওয়ায় অনেকে আবেদন করতে পারছিলেন না। তাই সকলেই যাতে দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান, সে জন্য হাওড়া জেলায় চালু হয়েছে স্থায়ী শিবির। জেলার ১৫৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও স্কুল ভবন ভাড়া নিয়ে এই শিবির করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রবিবার ও ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন এই স্থায়ী শিবির চালু থাকবে। এর ফলে ভিড়ের চাপ অনেকটাই কমবে বলে আশা করছেন প্রশাসনের কর্তারা। একই সঙ্গে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে আবেদন করার জন্য বহু মহিলা সকাল থেকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। অনেকের সঙ্গে তাঁদের শিশু সন্তানেরাও থাকছে। তাদের খিদে পেলে মায়েরা যাতে স্তনদুগ্ধ খাওয়াতে পারেন, সে জন্য স্থায়ী এবং অস্থায়ী সমস্ত শিবিরে লক্ষ্মীর ভান্ডারের কাউন্টারের সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে ‘মাদার্স ব্রেস্ট ফিডিং রুম’। জেলার ১৪টি ব্লকেই দুয়ারে সরকারের শিবিরে এই ব্যবস্থা থাকছে বলে জানিয়েছেন হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সৌমেন পাল। তিনি বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকারের লাইনে দাঁড়িয়ে যাতে কাউকে ফিরে যেতে না হয়, সকলেই যাতে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান, তার জন্য একমাত্র হাওড়াতেই স্থায়ী শিবির করা হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডার, শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী-র মতো ১৯টি প্রকল্পে বৃহস্পতিবার হাওড়া জেলায় স্থায়ী এবং অস্থায়ী শিবির মিলিয়ে আবেদন করেছেন ২৭,৭৩৪ জন। আর গত ১৬ অগস্ট থেকে শুরু হওয়া দুয়ারে সরকার প্রকল্পে এ দিন পর্যন্ত গোটা জেলায় আবেদন করেছেন ১০ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪৬ জন।