—প্রতীকী চিত্র।
স্ত্রী প্রধান। কিন্তু বকলমে তাঁর স্বামী, তথা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আরামবাগের আরান্ডি ১ পঞ্চায়েত পরিচালনা করায় কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সদস্যদের একটা বড় অংশ। তাঁরা ফোনে ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে বিহিত চেয়েছেন। বিডিও অনন্যা বিশ্বাস জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ মানেননি প্রধান তেকদিরা খাতুন।
ওই পঞ্চায়েতের মোট ১৬ জন সদস্যের মধ্যে ১১ জন তৃণমূলের, বাকিরা বিজেপির। বিরোধী সদস্যদের অভিযোগ তো আছেই, ৮ তৃণমূল সদস্যেরও ক্ষোভ, দলের অঞ্চল সভাপতি মুন্সি মহম্মদ ইকবালের খবরদারি নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ, ইকবালের নির্দেশ মতোই অন্য সদস্যদের অন্ধকারে রেখে প্রধান নানা জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সংসদে কী কাজ হচ্ছে বা কোন ঠিকাদার কাজ পাচ্ছেন, তা পঞ্চায়েত সদস্যেরা জানতে পারছেন না।
তৃণমূলের ‘বিক্ষুব্ধ’ সদস্যদের মধ্যে জাহানারা বেগমের অভিযোগ, “আমার সংসদে কী কাজ হচ্ছে বা হবে, তা আমাকে জানানো হচ্ছে না। স্থানীয় মানুষের চাহিদার তোয়াক্কা না করে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।” উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, সাতমাসা গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় পানীয় জলের অভাব থাকায় সেখানে নলকূপ (সাবমার্সিবল)হওয়ার কথা ছিল। তাঁর অভিযোগ, দলের অঞ্চল সভাপতির কথা মতো নলকূপ হয়েছে অন্য পাড়ার প্রাথমিক স্কুলের বাইরে। সাধারণ সভায় কোথায় কী কাজ হয়েছে বা নিজস্ব তহবিলের হিসাব চাইলে প্রধান অপমান করেন বলেও তাঁর অভিযোগ। একই রকম অভিযোগ দলের বাকি ৭ সদস্যদেরও। বিজেপির ৫ সদস্যের মধ্যে বঙ্কুবিহারী বাগের অভিযোগ, “আমাদের ৫ সদস্যের কারও সংসদে কোনও কাজই হয়নি। গত সাধারণ সভায় সেই প্রসঙ্গ তোলায় ইকবালের নির্দেশ মতো আমাদের পঞ্চায়েতে ঢুকতে দেবে না বলে হুমকি দিয়েছেন প্রধান।”
পক্ষান্তরে, প্রধানের দাবি, “সদস্যদের অভিযোগ ঠিক নয়। কোনও কাজ বা দরপত্র ডাকার ক্ষেত্রে সাধারণ সভায় সদস্যদের উপস্থিতিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” তাঁর স্বামীর খবরদারির অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান বলেন, “প্রধানের যা করণীয়, সেটা আমিই করি। অঞ্চল সভাপতি দলকে ভালবাসেন। তাই সবটা দেখেন।”
অঞ্চল সভাপতির দাবি, “পঞ্চায়েতে খবরদারি বা কাজকর্মের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। স্ত্রী প্রশাসনে নতুন। কয়েকজন তাঁকে ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছেন। যে হেতু পঞ্চায়েতের ভাল-মন্দের দায়িত্ব প্রধানের, তাই স্ত্রীকে ব্যক্তিগত ভাবে পরামর্শ দিই।’’