এই রাস্তা নিয়েই ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
বছর পাঁচেক আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় চণ্ডীতলা-২ ব্লকের বাকসা এবং গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েতে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের একটি রাস্তার কাজ হয়েছিল। কিন্তু সেই রাস্তার হতশ্রী অবস্থা এবং কাজে অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ উঠল।গত মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুর থেকে রাজ্য জুড়ে ‘পথশ্রী-রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন। তারপরেই পাশের ব্লক চণ্ডীতলা-২ থেকে ওই অভিযোগ তুলেছেন কিছু গ্রামবাসী।
একই অভিযোগ বিজেপিরও।বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মোহন আদক বলেন, ‘‘মোট সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার বোর্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই কাজে অনিয়ম পদে পদে। ওই সড়কের মধ্যে ২ কিলোমিটার রাস্তা গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েত আগেই ১০০ দিনের কাজ এবং পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মিলিত টাকায় করেছে। তা হলে কেন ওই রাস্তার দৈর্ঘ্য সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দেখানো হবে? রাস্তার যা দশা, ‘ক্ষতশ্রী’ নাম দেওয়া যায় এখন।
ঠিকাদারের সংস্কার করার কথা থাকলেও হয়নি।’’বাকসা পঞ্চায়েতের বারোমন্দির থেকে মণিরামপুর, আচার্য্পাড়া হয়ে গঙ্গাধারপুর পর্যন্ত রাস্তাটি বিস্তৃত। অন্তত ৫০ হাজার লোকের বসবাস সংলগ্ন গ্রামগুলিতে। রয়েছে দু’টি প্রাথমিক ও দু’টি উচ্চ বিদ্যালয়। স্কুল পড়ুয়ারা ওই রাস্তা ধরেই যাতায়াত করে। কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সংস্কারই হয়নি সে ভাবে।জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থে জেলা নির্বাহী বাস্তুকারের আওতায় ওই সড়কে বছর পাঁচেক আগে কাজ শুরু হয়। কিন্তু উত্তরবঙ্গের লাটাগুড়ির যে ঠিকাদার সংস্থা ওই কাজের বরাত পায়, তারা মাঝপথেই কাজ অসম্পূর্ণ রেখে পালিয়ে যায়। তারপর জেলা প্রশাসন ফের দরপত্র ডেকে অন্য ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে ওই কাজ শেষ করায়।
বাকসার এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘রাস্তা তৈরির আগে ঠিকাদারকে জনসমক্ষে ওই কাজের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেখাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। রাস্তার সংস্কারের কাজেও আর হাত দেননি। যদিও অন্তবর্তী সময়ে রাস্তা খারাপ হলে সংস্কার করে দেওয়াটাও বিধি।’’এই বিষয়ে হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উন্নয়নের কাজে রাজনীতির কথা কে কী বলছেন, তার উত্তরে যাচ্ছি না। ওই সড়কের কাজ শুরুর পরই ঠিকাদারের নিজস্ব সমস্যা হয়। তিনি কাজ বাকি রেখে চলে যান। তখন তাঁর জমা রাখা টাকা বিধি অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত করে আমরা কাজ শেষ করি। প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার কাজের পাঁচ বছর পূর্ণ না হলে বিধি অনুযায়ী ফের সড়কে হাত দেওয়া যায় না। সেই মেয়াদ চলতি বছরেই শেষ হবে। আমরা তখন ফের দরপত্র ডেকে ওই সড়কের কাজে হাত দেব।’’