Swamp Filling

ডোবা ভরাটের অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক পিয়ারাপুরে

কাজ যাঁরা করছেন, তাঁদের আইনজীবী দীপ্তব্রত বটব্যাল বলেন, ‘‘সমস্ত আইন মেনে, রাজস্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ভূমি দফতর সরেজমিনে অনুসন্ধান করে ফের সে কথা লিখিত জানিয়েছে।

Advertisement

প্রকাশ পাল , কেদারনাথ ঘোষ

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৫
Share:

এই ডোবা ভরাট নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় বেআইনি ভাবে একটি ডোবা ভরাট হচ্ছে বলে পুলিশ ও ভূমি দফতরে নালিশ ঠুকেছেন শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান। ভূমি দফতর জানিয়েছে, বিধিবদ্ধ অনুমতি নিয়েই গুদাম তৈরির জন্য একটি সংস্থা ওই ডোবা বোজাচ্ছে। তবে পুলিশ ওই কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়েছে। কানাঘুষো, এক প্রভাবশালীর অঙ্গুলিহেলনেই ওই কাজ হচ্ছে। প্রধান শেখর সাঁপুইয়ের দাবি, একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই তিনি শ্রীরামপুর থানা ও ভূমি দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

যদিও সংশ্লিষ্ট সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘পাঁচ বছর আগেই সরকারি দফতরের অনুমতি মেলে। সেই অনুযায়ী দু’টি ডোবা ভরাট করা হচ্ছে। সমপরিমাণ জমিতে জলাশয় আগেই খোঁড়া হয়েছে। পঞ্চায়েতও লিখিত অনুমতি দেয়। এখন কেন অভিযোগ, সেটাই প্রশ্ন।’’

Advertisement

এ ব্যাপারে প্রধানের ব্যাখ্যা, ওই সংস্থার আবেদনে অনেকগুলি দাগ নম্বর দেওয়া ছিল। কোন দাগের জমি ভরাট এবং কোন জমিতে জলাশয় খনন করা হবে, নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘অত দাগের জমি খতিয়ে দেখা সম্ভব নয়।’’ ব্লক ভূমি দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রধানের অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করা হয়েছে। বেআইনি কিছু মেলেনি। ওই সংস্থার কাছে ডোবা ভরাটের অনুমতি রয়েছে। সম আয়তনের ডোবা খনন করা হয়েছে বলে তাঁরা জেনেছেন। তবে সেই জায়গায় যাওয়া যায়নি।

ওই কাজ যাঁরা করছেন, তাঁদের আইনজীবী দীপ্তব্রত বটব্যাল বলেন, ‘‘সমস্ত আইন মেনে, রাজস্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ভূমি দফতর সরেজমিনে অনুসন্ধান করে ফের সে কথা লিখিত জানিয়েছে। এর পরেও কোনও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ কাজ বন্ধ করে রেখেছে। কোনও প্রভাবশালীর প্ররোচনায় ওই কাজ আটকানোর চেষ্টা চলছে বলে মনে করছি। আইন মেনে কাজ করেও এই পরিস্থিতি কেন হবে?’’

পুলিশের বক্তব্য, প্রধানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান চলছে। সেই কারণেই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘ভূমি দফতর ছাড়পত্র দিয়ে থাকলে একটা দিক মিটে গেল। অভিযোগের আরও দিক খতিয়ে দেখা দেখা হচ্ছে।’’ তবে অনুসন্ধানের সেই বিষয় কী, পুলিশ জানাতে চায়নি। কোনও ‘প্রভাবশালী’র কথাও পুলিশ মানেনি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতের ছোটবেলু এলাকায় ওই ডোবা ভরাট করা হচ্ছিল। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, গত কয়েক বছরে এলাকায় কৃষিজমি এবং নিকাশি নালা ভরাট করে বিভিন্ন বেসরকারি বিপণন সংস্থার বড় বড় গুদাম তৈরি হয়েছে। ফলে বছরভর জল দাঁড়িয়ে খেত অনাবাদি হয়ে পড়েছে। বর্ষায় জলমগ্ন হচ্ছে এলাকা। নতুন করে জলাশয় ভরাট হলে সমস্যা বাড়বে। তবে তাঁরা মনে করেন, নতুন করে ডোবা খোঁড়া হয়ে থাকলে সমস্যা হবে না। আগে যে সমস্ত নিকাশি নালা বন্ধ হয়েছে, সেগুলিরও বিকল্প নালা তৈরি করা উচিত বলে তাঁদের দাবি।

এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘এর আগে নিকাশির দফারফা হলেও পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আগে নিকাশির যে ক্ষতি হয়েছে, তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে নিকাশি ব্যবস্থা সঠিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হোক।’’

প্রধানের বক্তব্য, কর্মসংস্থানের আশায় আবেদনের ভিত্তিতে পঞ্চায়েতের তরফে কৃষিজমিতে গুদাম তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু জলাশয় ভরাটের অনুমতি
দেওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement