চলছে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ। ডানকুনির কাছে। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
সার্ভিস রোড ছাড়াও ফুট ওভারব্রিজ এবং সাবওয়ের দাবি বেড়েছে। তা পূরণ করতে হলে প্রকল্পের খরচ বাড়বে। তাই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পে ওই কাজ এবং সে জন্য বাড়তি ১০০ কোটি টাকা চেয়ে কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণ মন্ত্রকে আবেদন জানাল জাতীয় সড়ক সংস্থা (এনএইচএআই)। বর্তমানে ১৭০০ কোটি টাকায় ওই জাতীয় সড়ককে ছয় লেনে সম্প্রসারণের কাজ চলছে।
এনএইচএআই-এর প্রকল্প অধিকর্তা (পিডি) স্বপন মল্লিক জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক থেকে অনুমোদন এবং অর্থ পেলেই বাড়তি কাজ করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘‘সিঙ্গুরের বিধায়ক ১৪টি সাবওয়ে ও ফুট ওভারব্রিজ এবং সার্ভিস রোডের আবেদন করেছেন। আবেদনে সাড়া দিয়ে তিনটি কাজ ইতিমধ্যে বর্তমান প্রকল্পে অনুমোদন করে দিয়েছি। বাকি কাজের অনুমোদনের জন্য আবেদন পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে ভূতল পরিবহণ মন্ত্রকে। যার ব্যয় বরাদ্দ অন্তত ১০০ কোটি। কিন্তু ওই পরিমাণ অর্থ আমাদের মূল প্রকল্প ব্যয়ে ধরা নেই।’’
সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বহু সময়ই বলছেন, আমাদের দাবি মতো তিনটি জায়গায় কাজের অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। অন্য কাজগুলি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই তাঁরা জেলা প্রশাসনকে সেই সংক্রান্ত কোনও কাগজপত্র দেখাননি।’’
ওই জাতীয় সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েই চলেছে। তার জেরে ‘টোল’ দিয়েও মানুষ যানজটে জেরবার হচ্ছেন প্রতিদিন। দুর্ঘটনাও এড়ানো যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতেই জাতীয় সড়ক সংস্থা দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েকে ছয় লেনে সম্প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মোট দু’ভাগে ওই কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ডানকুনি থেকে পালসিট এবং পালসিট থেকে পানাগড় পর্যন্ত। ১০০ কিলোমিটারের বেশি এই দীর্ঘ এই সড়ক সম্প্রসারণে ১৭০০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ হয়। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষ থেকে দু’টি ভিন্ন সংস্থাকে দিয়ে ওই কাজ করাচ্ছে এনএইচএআই।
কিন্তু হুগলিতে শাসকদলের একাংশ বারবার ওই সড়কের নানা জায়গায় সাবওয়ে এবং ফুট ওভারব্রিজের দাবি তুলছেন। আন্দোলনেও নেমেছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে সোই দাবির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪। আন্দোলনের জেরে কাজের গতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এনএইচএআই-এর পদস্থ কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, স্থানীয় মানুষজনের সমস্যা এবং চাহিদার কথা মাথায় রেখেই নতুন করে সমীক্ষা করে কাজে নামা হয়েছে। সম্প্রসারণের কাজের আগে হুগলিতে শুধুমাত্র কাপাসহাড়িয়ায় একটি মাত্র ‘লে বাই’ (যেখানে ট্রাক রাখা যায়) ছিল। নতুন পরিকল্পনাতে আরও মোট ১৮টি ‘লে বাই’ তৈরি করা হবে। যাতে জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের কারণে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। নতুন করে করা ওই সমীক্ষাতে বালির মাইতিপাড়া থেকে ডানকুনি হয়ে ধনেখালির মধ্যে কয়েকটি ফুট ওভারব্রিজল এবং সাবওয়ে তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। থাকছে সার্ভিস রোডও। যাতে জাতীয় সড়কের আশপাশের গ্রামের মানুষদের যাতায়াতে সমস্যা না হয়।
কিন্তু এরপরেও মূলত সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্নার নেতৃত্বেই হুগলিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ১৪টি জায়গায় সাবওয়ে-ফুট ওভারব্রিজ এবং টানা সার্ভিস রোডের দাবি ওঠে। বেচারাম আগে জানিয়েছেন, তিনি ২০২১ সালের জুন মাসে এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। মুখ্যমন্ত্রীও ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। এরপরও তাঁদের দাবিকে কেন্দ্র গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে তাঁর অভিযোগ।