—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিন এগিয়ে আসছে। হুগলির অন্তত পাঁচ পঞ্চায়েতে ‘নির্দল’দের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। এ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা।
নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়ে তৃণমূলের অনেকেই নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। যাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি, তাঁদের আর ফেরানো হবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ পর্যন্ত সেই নির্দেশই বলবৎ রয়েছে। কিন্তু বোর্ড গঠনের সময়ে কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলেরই একাংশের।
হুগলিতে দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, বোর্ড বিরোধীদের হাতে চলে গেলেও নির্দলদের সাহায্য নেওয়া হবে না। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে পরিস্থিতিই তৈরি হোক না কেন, কোনও ক্ষেত্রেই নির্দলদের সাহায্য নেওয়া হবে না। এটাই দলের স্পষ্ট নীতি। তাতে পঞ্চায়েতে আমাদের বোর্ড গঠন না হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে হবে।’’
বোর্ড গঠনের সময়ে নির্দলদের ভূমিকা নির্ণায়ক হতে চলেছে যে সব পঞ্চায়েতে, তার মধ্যে রয়েছে শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর। এখানে ৩০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১৪টি। বিজেপি ৮টি, সিপিএম ৫টি এবং নির্দল ৩টি। এখানে বোর্ড গড়তে বিরোধীরা তলে তলে একজোট হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে একটি সূত্রের দাবি। বিরোধীরা অবশ্য এ কথা মানেনি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে শাসকদলকে বোর্ড গড়তে হলে নির্দলদের সাহায্য নিতেই হবে। কিন্তু তৃণমূল নির্দলদের প্রশ্নে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় লড়াই জমবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বলাগড় ব্লকের এক্তারপুর পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও নির্দল মাথাব্যথার কারণ হতে যাচ্ছে শাসকদলের। এখানে ১৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১০টি। বিজেপি ৪, নির্দল ৪ এবং সিপিএম পেয়েছে একটি আসন। ওই পঞ্চায়েতে শাসকদলের বিদায়ী উপপ্রধান টোটন মণ্ডল এ বার টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে জিতে এসেছেন। তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে প্রধান পদের দাবিবার অনেকেই। ফলে, নির্দলদের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
এই ব্লকেরই গুপ্তিপাড়া ১ এবং সোমরা ২ পঞ্চায়েতে তৃণমূল এবং বিরোধীরা সমসংখ্যক আসন পেয়েছে। গুপ্তিপাড়া ১-এ নির্দল তিনটি এবং সোমরা ২-তে একটি আসন পেয়েছে। ফলে, এই দুই পঞ্চায়েতেও নির্দলের ভূমিকা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
পান্ডুয়ার জামগ্রাম-মণ্ডলাই পঞ্চায়েতে ১৪টি আসনের মধ্যে ৭টি পেয়েছে সিপিএম, একটি নির্দল এবং ৬টি তৃণমূল। শাসকদলের ব্লক সভাপতি সঞ্জয় ঘোষের দাবি, তাঁরাই পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়বেন। তিনি বলেন, ‘‘দল আপত্তি করলেও নির্দলের ভোট আমরাই পাব। ভোটাভুটিতে কেউ আমাদের সমর্থন করলে কিছু করার নেই।’’ কিন্তু সে ক্ষেত্রেও তো সোজা অঙ্কে ‘টাই’ (সমসংখ্যক) হওয়ার কথা। পোড়খাওয়া নেতা প্রত্যয়ের সঙ্গে জানান, জিতবে তৃণমূলই। কিন্তু কী ভাবে, সে ব্যাখ্যা তিনি দেননি।