প্রতীকী ছবি।
মাথার গভীর ক্ষত থেকে চাপ চাপ রক্ত বেরিয়ে মেঝেতে জমাট বেঁধে গিয়েছে। শরীরের নানা জায়গায় রক্ত। মুখেও আঘাতের চিহ্ন। চিৎ হয়ে পড়ে থাকা দেহে শাড়িটাও অবিন্যস্ত।
বৃস্পতিবার দুপুরে হাওড়ার নাজিরগঞ্জ থানার চাঁদমারি রোডের ধারে একটি একতলা বাড়ি থেকে এ ভাবেই উদ্ধার হয়েছিল এক প্রৌঢ়ার দেহ। তিনি সেখানে ভাড়া থাকতেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, পুলিশ দেহটি নিয়ে যাওয়ার পরেও এলাকার বাসিন্দারা কিছু জানতে পারেননি। যে বাড়িতে ওই প্রৌঢ়া ভাড়া থাকতেন, সেখানকার বাসিন্দাদেরও আওয়াজ পাওয়া যায়নি। শুক্রবার ওই মহিলার মেয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে এসে পুলিশের কাছে মাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করার পরে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
পুলিশ জানায়, মৃতার নাম ঘাসো তিরকি (৬১)। পেশায় ঠিকা শ্রমিক ওই মহিলা চাঁদমারি রোডের বাসিন্দা পিন্টু পণ্ডিত নামে এক ঠিকাদারের কাছে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে হিসাবে কাজ করতেন। পিন্টুর বাড়ির কাছেই একটি ঘরে গত ৩০ বছর ধরে একা ভাড়া ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাঁর দেহ উদ্ধারের পরে পিন্টুই পুলিশে খবর দেন। শুক্রবার তিনিও পুলিশে ঘাসোকে খুনের অভিযোগ করেন।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে একটি রক্তমাখা শাবল মিলেছে। মনে হচ্ছে, ওই শাবল দিয়ে মাথায় মেরে খুন করা হয়েছে। শীঘ্রই খুনি ধরা পড়বে।’’
এ দিন পিন্টু বলেন, ‘‘আমিই প্রথম ঘাসোকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে থানায় খবর দিই। কী ভাবে উনি মারা গিয়েছেন, প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরে মনে হয়েছে, শাবল দিয়ে মেরে খুন করা হয়েছে। তাই আমিও খুনের অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, যে হেতু পিন্টুর পরিবারের দু’জন কেন্দ্রীয় সরকারি পুলিশে কর্মরত, তাই প্রথম থেকেই ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এ দিন ঝাড়খণ্ড থেকে আসেন মৃতার মেয়ে বিরসি রায়। তিনি অভিযোগ করেন, শাবল জাতীয় ভারী কিছু দিয়ে
তাঁর মায়ের মাথায় ও শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত করে থেঁতলে খুন করা হয়েছে। কিন্তু কে বা কারা ওই প্রৌঢ়াকে খুন করল, সেই রহস্য কাটেনি।