কমপ্লেক্সের কাজ শেষের মুখে। ছবি: তাপস ঘোষ
মগরার পরে এ বার চুঁচুড়ার একটি বাংলা মাধ্যম স্কুলেও গড়ে উঠছে ‘মিনি ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স’। এখন শুধুই দু’টি জানলা তৈরির কাজ বাকি। উদ্বোধন সময়ের অপেক্ষা!
উৎসাহে ফুটছে চুঁচুড়ার কাপাসডাঙা সতীন সেন উচ্চ বিদ্যাপীঠ নামে সরকার পোষিত ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। কজ কতটা এগোচ্ছে, রোজই দেখতে ভিড় জমাচ্ছে তারা। জেলা যুবকল্যাণ দফতরের ২০ লক্ষ টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ১৯৫৭ সালে স্থাপিত এই বিদ্যালয়ের সামনেই নিজস্ব খেলার মাঠ রয়েছে। সেই মাঠের এক পাশেই ৩০ ফুট চওড়া ও ৬০ ফুট লম্বা মিনি ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক তরুণকান্তি কুমার বলেন, ‘‘আনন্দের ব্যাপার। কারণ, দীর্ঘদিন পড়ে থাকার পর ইন্ডোরের কাজ শেষ হওয়ার পথে। এখন শুধুই উদ্বোধনের অপেক্ষা। পরিচালন সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে দিনক্ষণ ঠিক হবে। এখানে ব্যাডমিন্টন, টেবিল-টেনিস, জিমন্যাস্টিক্সের মতো খেলাধুলো হবে। জেলা স্তরের স্কুল ক্রীড়াও হতে পারে। খেলাধুলোয় শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হয়। তাতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়বে।’’ একই বক্তব্য পুরপ্রধান অমিত রায়েরও।
ওই স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, খেলাধুলোর উন্নতিতে ২০১৬ সালে এই ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির জন্য জেলা যুবকল্যাণ দফতরে আবেদন করা হয়। সেই আবেদন মঞ্জুর হলে প্রথম ধাপে ১০ লক্ষ টাকা আসে। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার তরফে একটি ঠিকাদার সংস্থা কাজ শুরু করে। মাস কয়েক ধরে প্রথম ধাপের কাজ চলে। কিন্তু তারপর থেকে টাকা না আসায় বাকি কাজ থমকে ছিল। ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আসেন তরুণকান্তি। বাকি টাকার জন্য ফের তোড়জোড় করেন তিনি। কিন্তু কোভিড-পর্বে আর পাঁচটি কাজের মতো এটিও ধামাচাপা পড়ে যায়। গত বছর স্কুলের পক্ষ থেকে ফের আবেদন করা হলে বাকি কাজের জন্য দ্বিতীয় দফায় ১০ লক্ষ আসে। তারপর জোরকদমে শুরু হয় কাজ।
মগরার সুলতানগাছা হাই স্কুলে এমনই একটি ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি হয় ২০১৯ সালে। সেটি এখন ছাত্রছাত্রীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন-সহ নানা খেলারধুলোর ব্যবস্থা রয়েছে সেখানেও। সেটিও সরকার পোষিত স্কুল।
চুঁচুড়ার স্কুলটির একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রাজন্যা চট্টোপাধ্যায় চায়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইন্ডোর চালু হয়ে যাক। তার কথায়, ‘‘আমি আর মাত্র এক বছর স্কুলে আছি। যে ক’দিন পাব, খেলে যাব।’’ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রাসেদ রহমান বলে, ‘‘আমি হয়তো খেলার সুযোগ পাব না। কিন্তু আমার ভাই-বোনেরা খেলতে পারবে, ভেবেই ভাল লাগছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা তথা সদ্য অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় স্তরের ব্যাডমিন্টনে বাংলার হয়ে খেলা স্বাগতা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুলে এ ধরনের পরিকাঠামো হলে খেলাধুলোর ভবিষ্যৎ ভাল হবে।’’
এলাকার কাউন্সিলর তথা বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির অন্যতম সদস্য নির্মল চক্রবর্তী মনে করেন, এ ভাবে চলতে থাকলে সরকারি স্কুলগুলির প্রতি অভিভাবকদের আগ্রহ আবার বাড়তে পারে।