Summer Vacation

টানা ছুটি নয়, সকালে স্কুলের আর্জি

জানা গিয়েছে, দুই জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাধারণত ২ বৈশাখ থেকে সকালে (৬টা থেকে সাড়ে ১০টা অথবা সাড়ে ৬টা থেকে ১১টা) ক্লাস হয় গরমের ছুটির আগে পর্যন্ত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:০৬
Share:

টানা ছুটি চান না বহু অভিভাবক।

বেজায় গরম। তার জেরে স্কুলে গরমের ছুটি তিন সপ্তাহ এগিয়ে এসেছে। সরকারি এই ঘোষণায় প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা মহল এবং অভিভাবকদের মধ্যে। তাঁদের একটি বড় অংশ চান, প্রয়োজনে সকালে স্কুল হোক। তাঁদের যুক্তি, বাড়তি ছুটি দিলে সিলেবাস শেষ হবে না। বহু ছেলেমেয়ের গৃহশিক্ষক নেই। তারা অনেক পিছিয়ে পড়বে।

Advertisement

জানা গিয়েছে, দুই জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাধারণত ২ বৈশাখ থেকে সকালে (৬টা থেকে সাড়ে ১০টা অথবা সাড়ে ৬টা থেকে ১১টা) ক্লাস হয় গরমের ছুটির আগে পর্যন্ত। এ বার অত্যধিক গরমে গত মঙ্গলবার থেকে সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্কুল চলছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের বক্তব্য, সকালে তাপমাত্রা কম থাকে। ক্লাস করতে বিশেষ সমস্যা হচ্ছে না। ছুটি না বাড়িয়ে, প্রয়োজনে সকাল ৯টা পর্যন্ত হলেও স্কুল চলুক।

বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও সহমত। পুরশুড়ার ভাঙামোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল রক্ষিত বলেন, “এত ছুটি অযৌক্তিক। সকাল সাড়ে ৬টা-৭টা থেকে স্কুল চালাতে অসুবিধা কোথায়? ১০টায় মিড-ডে মিল খেয়ে ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি যাবে।” গোঘাটের ভগবতী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৈয়েবুন্নেসা বেগম বলেন, “এই গরম কত দিন চলবে, কেউ জানি না। সকালে স্কুলের বিকল্প ব্যবস্থা করাই যেত।” শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের অনেকের অভিজ্ঞতা, করোনায় দু’বছর স্কুলবিমুখ হয়েছিল পড়ুয়ারা। তাদের স্কুলে ফেরাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। অতিরিক্ত ছুটিতে সেই প্রবণতা ফের বাড়বে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

Advertisement

টানা ছুটির পক্ষপাতী নন বহু অভিভাবকও। গোঘাটের তাজপুর গ্রামের হেমলাল চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে অঙ্কনা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। হেমলাল বলেন, “টানা ছুটি দিলে বিশেষত আমাদের মতো পরিবার, যাদের পর্যাপ্ত গৃহশিক্ষক রাখার সামর্থ্য নেই, তাঁদের সন্তানেরা সমস্যায় পড়বে।” শ্রীরামপুরের এক অভিভাবকের প্রশ্ন, ‘‘বাড়তি ছুটির মাঝে কালবৈশাখী হয়ে গরম কিছুটা কমলে, স্কুল খুলে দেওয়া হবে? এ ভাবে সরকারি স্কুলকে ইচ্ছাকৃত ভাবে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে না তো?’’ সনাতন ব্যাপারী নামে বলাগড়ের বিদ্যাসাগর কলোনির এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘স্কুল না থাকলে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার শিকেয় ওঠে। সকালে অন্তত স্কুল হোক।’’ বলাগড়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী তনুশ্রী ব্যাপারী বলে, ‘‘বেশি ছুটি থাকলে সিলেবাস শেষ হবে না।’’

বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারেও হুগলিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হাওড়ায় সেই তাপমাত্রা ৪০-এ ঠেকেছে। রোদে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়েছে। গরমে অসুস্থের চিকিৎসা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বৃহস্পতিবার অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হল সবাস্থ্যকর্মীদের।

হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইয়া জানান, গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এলে, প্রাথমিক চিকিৎসা জরুরি বিভাগেই হবে। গরম থেকে বাঁচতে নানা পরামর্শ দিয়ে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চড়া রোদে বাইরে না বেরোনো, বেশি জল খাওয়ার উপরে জোর দেওয়ার কথা বলেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement