জলের তলায় চাষের জমি। উদয়নারায়ণপুরে। ছবি: সুব্রত জানা
বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে হাওড়া জেলায় চাষের ক্ষতি হয়েছে ১০৮ কোটি টাকার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে আমন ধান চাষ। এ ছাড়াও, ক্ষতির তালিকায় আছে আনাজ, পাট এবং পান বরজ। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ক্ষতির রিপোর্ট বুধবারেই নবান্ন পাঠানো হয়েছে নবান্নে। চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনও করা হয়েছে।
জেলা পরিষদের কৃষি সংক্রান্ত কর্মাধ্যক্ষ রমেশ পাল বলেন, ‘‘দুর্যোগে চাষে ১০৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির যা বহর, তা শুধু বিমা দিয়ে পূরণ করা যাবে না। তাই জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি। যাতে সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও সর্বস্বান্ত চাষিদের প্রতি বিভিন্ন দিক দিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়।’’
আমতা-২ এবং উদয়নারায়ণপুর— এই দু’টি ব্লকই বন্যার কবলে পড়ে। অন্যদিকে, জেলার বহু এলাকা অতিবৃষ্টির ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সব কিছু মিলিয়ে জেলা জুড়েই চাষে ক্ষতির বহর বেড়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। এর মধ্যে বন্যার কবলে পড়া দু’টি ব্লকের ক্ষতির বহর অনেকটা বেশি। এই দু’টি ব্লকের চাষ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের দাবি।
জেলায় আমন ধানের চাষ হয় ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে। এখন চলছে ধানের চারা রোপণের মরসুম। ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেগুলি সব ডুবে গিয়েছে। বাকি জমিতে রোপণের জন্য যে চারা তৈরি ছিল, নষ্ট হয়েছে সেগুলিও। চাষিদের হাতে বীজধানও আর নেই। ফলে, এই মরসুমে আর নতুন করে আমন ধানের চাষ করা আর সম্ভব নয় বলে মনে করছে
জেলা প্রশাসন।
পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জেলা পরিষদের তরফ থেকে জেলা কৃষি দফতরের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে কিছু উন্নত মানের বীজ ধানের জোগান দেওয়ার জন্য। রমেশবাবু বলেন, ‘‘উন্নত মানের বীজধান পেলে তাতে অল্প সময়ের মধ্যে ফলন সম্ভব। জেলা কৃষি দফতর আমাদের প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। তবে তাতেও খুব বেশি জমিতে চাষ হবে না।’’
ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় চাষিরা অবশ্য শস্যবিমার সুযোগ পাবেন। বিমা সংস্থাগুলি ক্ষয়ক্ষতির হিসাব সংক্রান্ত সমীক্ষার কাজও শুরু করেছে। তাদের ৩১ অগস্টের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান।