আন্দুল রোডের এখন যা অবস্থা। নিজস্ব চিত্র — ফাইল চিত্র।
সপ্তাহখানেক আগে শুরু হয়েছে সাঁতরাগাছি সেতু মেরামতির কাজ। সেই কারণে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে যানজট লেগেই রয়েছে। বিদ্যাসাগর সেতু থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সমান্তরালে থাকা আন্দুল রোড সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা হলে যানজট অনেকটাই এড়ানো যেত বলে দাবি করছেন রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ। এখনও ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু রাস্তাটি সম্প্রসারিত হলে যত গাড়ি যেতে পারত, তা যাচ্ছে না।
রাস্তাটি বিদ্যাসাগর সেতু থেকে বেরিয়ে আলমপুরে মুম্বই রোডে মিশেছে। কিন্তু রাস্তাটি কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে রয়েছে। রাস্তার দু’দিক জবরদখল হয়ে রয়েছে। পূর্ত (সড়ক) দফতরের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, সম্প্রসারণ করা হলে আন্দুল রোড দিয়ে কলকাতা ও হাওড়াগামী গাড়ি চালানো যেত। তাতে শুধু কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির চাপই কমত না, মুম্বই রোডে ওঠার সময়ে বা এই রাস্তা ধরে কলকাতা-হাওড়া যাওয়ার সময়ে গাড়িগুলিকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের তুলনায় অন্তত ১১ কিলোমিটার কম রাস্তা অতিক্রম করতে হত। কিন্তু তা হচ্ছে না।
কেন হয়নি ওই কাজ?
রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আন্দুল রোড সংস্কার করার জন্য একাধিকবার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাস্তার দু’দিকে জবরদখলকারীরা থাকায় তাঁদের হটানোর প্রশ্নে সব কিছু ভেস্তে যায়। জবরদখলই যে রাস্তা সম্প্রসারণের প্রধান বাধা, তা স্বীকার করেন জেলা পুলিশের কর্তারাও।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির আগে হাওড়া ও কলকাতা থেকে মুম্বই রোডে ওঠার অন্যতম প্রধান রাস্তা ছিলআন্দুল রোড। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মৌড়িগ্রাম স্টেশনের লেভেল ক্রসিংয়ের এর জন্য এই রাস্তায় বেশ যানজট হত। যানজট এড়াতে রেল ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে ২০০৬ সালে চালু হয় মৌড়িগ্রাম রেলওয়ে উড়ালপুল। এই সেতু চালু করার সময়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং রেলের তাবড় আধিকারিকদের উপস্থিতিতে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, এই উড়ালপুল শুধু মৌড়িগ্রাম লেভেল ক্রসিং-এর যানজটই কমাবে না, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গাড়ির চাপ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের কিছু গাড়ি আন্দুল রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হলে চাপ কমবে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের।
মৌড়িগ্রাম উড়ালপুল চালু হওয়ার পরে কেটে গেল প্রায় ১৬ বছর। কিন্তু আন্দুল রোড সম্প্রসারণ ও সংস্কারের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার দিকে নজর দেয়নি রাজ্য সরকার। এখন কোনা এক্সপ্রেসওয়ের যানজট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।