WBSEDCL

মোমবাতির আগুনে পুড়ল বই, কিনে দিল প্রশাসন

রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ির কিছুটা দূরে শৌচাগারে যায় দুই বোন। মা-বাবা কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই সময় হঠাৎ জ্বলন্ত মোমবাতি উল্টে বিছানায় আগুন লেগে যায়। বইপত্র পুড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৪
Share:

পোড়া বইয়ের সামনে কোয়েল মল্লিক। —নিজস্ব চিত্র।

বিদ্যুৎ বিল মেটাতে না-পারায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যেই বাড়ির বিদ্যুৎ বিল কাটা গিয়েছিল। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কিশোরী তাই পড়াশোনা করছিল মোমবাতির আলোয়। সেই মোম থেকে আগুন ধরে শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর বইপত্র পুড়ে গেল।

Advertisement

পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতায় রবিবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রী হাতে পেল নতুন বই। হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি শিল্পা নন্দীর মধ্যস্থতায় বকেয়া টাকা জমা পড়তেই দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ জুড়ে দেওয়া হয় রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার তরফে। হুগলির পান্ডুয়া ব্লকের ইলছোবা দাসপুর পঞ্চায়েতের গজিনা দাসপুর গ্রামের ঘটনা।

কোয়েল মালিক নামে ওই ছাত্রী ইলছোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। পরীক্ষার ‘সিট’ পড়েছে পান্ডুয়া সুলতানিয়া হাই মাদ্রাসায়। মঙ্গলবার ইতিহাস পরীক্ষা রয়েছে। বাড়ির লোকেরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ঘরে মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়ছিল কোয়েল এবং তাঁর বোন, গজিনা দাসপুর বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির পড়ুয়া মমতা। রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ির কিছুটা দূরে শৌচাগারে যায় দুই বোন। মা-বাবা কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই সময় হঠাৎ জ্বলন্ত মোমবাতি উল্টে বিছানায় আগুন লেগে যায়। বইপত্র পুড়ে যায়। বাড়ির লোকজন এবং পাড়া-পড়শিরা এসে আগুন নেভান। কিছু জামাকাপড়ও পুড়ে যায়। কোয়েল বলেন, ‘‘আমার অ্যাডমিট কার্ড ভাগ্যিস বাইরে ছিল! না হলে সেটাও পুড়ে যেত।’’

Advertisement

রবিবার সকালে ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশের আধিকারিকরা ওই বাড়িতে যান। বিডিও (পান্ডুয়া) সেবন্তী বিশ্বাস জানান, দুই বোনের যে সব বই পুড়েছে, সেগুলি এ দিন সন্ধ্যায় কিনে দেওয়া হয়েছে। বিডিওর কথায়, ‘‘পরীক্ষায় বসতে কোনও অসুবিধা হবে না।’’ শিল্পা বলেন, ‘‘ওঁদের বিদ্যুতের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিয়েছি। এ দিনই বিদ্যুতের লাইন সংযোগ করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর পরীক্ষা এবং পড়াশোনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব রকম সাহায্য করব।’’

কোয়েলের বাবা কৃষ্ণ মালিক বলেন, ‘‘আমাদের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, মেয়েদের কিছু সার্টিফিকেটও পুড়ে গিয়েছে। সমস্যায় পড়লাম। প্রায় একটা দিন কোয়েলের পড়াও হল না। পুলিশ-প্রশাসন বই কিনে দেওয়ায় বাঁচোয়া।’’ কৃষ্ণ চাষবাস করেন। রাজমিস্ত্রির কাজও করেন। আর্থিক অবস্থা খারাপ। আবাস প্রকল্পের বাড়িতে তাঁরা থাকেন। ঘরে প্লাস্টার নেই। কৃষ্ণ জানান, ঘরের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২১০০ টাকা জমা দিতে না পারায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা গিয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement