school

School: স্কুলে যেতে চাই, প্রজাতন্ত্র দিবসে দাবি একরত্তিদের

নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস হাতে গোনা কিছু দিনের জন্য চলেছে। এখন ফের বন্ধ। অনলাইন পড়াশোনার সুবিধা থেকে পড়ুয়াদের অনেকেই বঞ্চিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৫৮
Share:

স্কুল খোলার আর্জি খুদে পড়ুয়াদের। বুধবার ডানকুনিতে।

বুধবার, প্রজাতন্ত্র দিবসের সকাল। ডানকুনিতে খেলার মাঠ ভরে উঠেছিল কচি গলার আওয়াজে। সমবেত ভাবে সেই আওয়াজ আসলে একটা ছোট্ট দাবি, ‘‘আমরা স্কুলে যেতে চাই।’’ তাদের হাতে ধরা ব্যানারে একই কথা লেখা।

Advertisement

দু’বছর ধরে পড়ুয়ারা ‘গৃহবন্দি’। নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস হাতে গোনা কিছু দিনের জন্য চলেছে। এখন ফের বন্ধ। অনলাইন পড়াশোনার সুবিধা থেকে পড়ুয়াদের অনেকেই বঞ্চিত। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে পড়াশোনা চালুর দাবি জোরদার হচ্ছে। স্কুলে যাওয়ার আর্জি নিয়ে ডানকুনি পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল উদ্যানে ছোটরা এ দিন রীতিমতো মিছিল করে। এর পিছনে অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ছিলেন।

এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘আমাদের অনেকেই গরিব। বাচ্চা সরকারি স্কুলে পড়ে। অনলাইনে পড়ানোর পরিকাঠামো নেই। আমরাও সে ভাবে পড়াশোনা না জানায়, বাচ্চাকে দেখিয়ে দিতে পারি না। ফলে, বাচ্চাদের পড়াশোনার খুব ক্ষতি হচ্ছে। স্কুল না খুললে এই ক্ষতি পোষানোর নয়।’’ রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ চালু করে লাভ হবে না বলে তাঁদের ধারণা।

Advertisement

পলাশ মুখোপাধ্যায় নামে এক যুবক বলেন, ‘‘সবই তো চলছে। সতর্কতা অবলম্বন করে স্কুল চালু করা হোক।’’ মাবুদ আলি নামে চাকুন্দির বাসিন্দা এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘আমার মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। দু’বছর স্কুলে যেতে পারেনি। আর কত দিন? স্কুলে গেলে মনের দিক থেকেও ছেলেমেয়ে ভাল থাকে। আমার মনে হয়, আমার মতো এ রাজ্যের সব বাবা-মা চান, বাড়িতে মোবাইল ফোনের সামনে না বসে সন্তান স্কুলে যাক।’’

অবিলম্বে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন চালুর দাবিতে বৃহস্পতিবার চুঁচুড়ায় পদযাত্রা হয় গণ-সংগঠন ‘সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটি’র হুগলি জেলা শাখার তরফে। শহরের খাদিনা মোড় থেকে ঘড়ির মোড় পর্যন্ত ওই মিছিলে আন্দোলনকারীদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড-পোস্টার। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শিক্ষক, কবি, শিল্পী, গবেষক, ছাত্রছাত্রী-সহ শিক্ষানুরাগী লোকজন শামিল হন। ঘড়ির মোড়ে পথসভা হয়। স্কুল চালু এবং ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’ বাতিলের দাবিতে স্লোগান ওঠে। ওই দাবিতে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

সংগঠনের সম্পাদক, শিক্ষক কুমুদ মণ্ডল বলেন, ‘‘পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিকাঠামো ঠিক করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফলাইনে পঠনপাঠন চালু করা হোক। করোনার দোহাই দিয়ে অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’-কে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার চালু করতে চাইছে। শিক্ষাকে ব্যবসায়ীদের পণ্যে পরিণত করতে চাইছে।’’

অবিলম্বে স্কুল খোলার দাবিতে এ দিন চুঁচুড়ায় মিছিল করে শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ। একই দাবিতে দিন কয়েক আগে চুঁচুড়া এবং শ্রীরামপুরে আন্দোলন করে এসইউসি প্রভাবিত ছাত্র সংগঠন ডিএসও। তাদের বক্তব্য, উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করে ছাত্রছাত্রীদের টিকাকরণের প্রক্রিয়া চালু রেখে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হোক। ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’ বাতিল করা হোক। চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে তারা মিছিল ও বিক্ষোভ অবস্থান করে। শ্রীরামপুরের বটতলাতেও অবস্থান হয়। সংগঠনের জেলা সভাপতি শঙ্কর দাস বলেন, ‘‘কর্পোরেট সংস্থার স্বার্থে এই অনলাইন পঠনপাঠন চলছে। তা বন্ধ করে অবিলম্বে অফলাইন শিক্ষা চালু করা হোক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement