সীমান্তে প্রয়োজন হলে পুলিশ-বিএসএফ একসঙ্গে কাজ করুক: রাজ্যপাল ফাইল ছবি
হাওড়া পুরসভা সংশোধনী বিল নিয়ে রাজ্যপাল-স্পিকার দ্বন্দ্ব চলছিল। এই বিল আইনে পরিণত করতে দেরি হওয়ার জন্য স্পিকারের দিকেই আঙুল তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ২৪ নভেম্বর এই বিল সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল। তাঁর অভিযোগ, স্পিকার এ নিয়ে কোন তথ্যই রাজভবনে পাঠাননি। তাই তিনি বিলে সই করছেন না।
রাজ্যপাল বলেন, ‘‘ বিল নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, উত্তর না দিয়ে উল্টে আমার বিরোধিতা করা হচ্ছে। স্পিকারের এই ধরনের আচরণ দুর্ভাগ্যজনক। এই আচরণ আমার ভাল লাগছে না।’’ তবে, তিনি আর বেশি দিন অপেক্ষা করবেন না। এর পর বিলটিকে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এ নিয়ে রাষ্ট্রপতি যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন। কারণ, তাঁর মনে হয় বিলটি রাজ্যের এক্তিয়ারের বাইরে।
রাজ্যপাল বিলটিতে সই না করার ফলে আইনগত ভাবে আটকে রয়েছে হাওড়া পুরসভার ভোট। রাজ্যের মতো নির্বাচন কমিশনও এই বিল কবে আইন হয় সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কারণ, তার পরই হাওড়া পুরসভার ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘বিলটি নিয়ে কোনও জটিলতা নেই। রাজ্যপালের কাজ হল সরকারকে উত্যক্ত করা।’’
বিএসএফ-এর এক্তিয়ার প্রসঙ্গে রাজ্যের দাবির সমালোচনা করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘সীমান্তে নিরাপত্তা একটি গুরূত্বপূর্ণ বিষয়। রাজ্য কেন বিএসএফ-এর এক্তিয়ারকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছে। প্রশাসনিক বৈঠকে বিএসএফ-কে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে সমর্থন করি না। প্রয়োজন হল পুলিশ-বিএসএফ একসঙ্গে কাজ করুক। কেন মুখ্যমন্ত্রী সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন?’’ এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সৌগত রায় বলেন, ‘‘ রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে করছে কেন্দ্র। রাজ্যপাল তার পক্ষেই সাওয়াল করছেন।’’
প্রসঙ্গত, শনিবার রাজ্যপাল কার্টুন শিল্পী নারায়ণ দেবনাথকে দেখতে যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছেন। তাঁর শিবপুরের বাডি়তে যান সস্ত্রীক রাজ্যপাল। তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি কথা বলেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। নাবায়ণ দেবনাথের চিকিৎসার খরচ বহনেরও আশ্বাস দেন তিনি।
নারায়ণ দেবনাথকে রাজ্যপালের দেখতে যাওয়া নিয়ে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছেন রাজ্যপাল। এখনও পদ্মশ্রী স্মারক হাতে পাননি নারায়ণ দেবনাথ। সেই স্মারক যদি রাজ্যপাল এসে তুলে দিতেন সেটা অনেক সম্মানের হতো।’’ নারায়ণ বাবুর ছেলে তাপস দেবনাথ বলেন, রাজ্যপালের আসা নিয়ে কোনও রাজনীতি রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে বাবা যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তখন রাজ্যপাল দেখতে গিয়েছিলেন।’’