হাওড়া স্টেশন। —ফাইল চিত্র।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নজির গড়ল হাওড়া স্টেশন। ওই স্টেশনের ২৩টি প্ল্যাটফর্ম এবং তার মূল ভবনের ছাদের বিস্তৃত পরিসর কাজে লাগিয়ে বৃষ্টির জল সংগ্রহ করে তার পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ধরে রাখা ওই জলের একাংশ ফের ভূগর্ভে জলস্তর রক্ষার লক্ষ্যে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। হাওড়া স্টেশনের মূল ভবন এবং প্ল্যাটফর্মের ছাউনি মিলে ৭৮৮৩১.৬০ বর্গমিটার পরিসর জুড়ে বৃষ্টির জল সংগ্রহ করা হচ্ছে। নতুন কমপ্লেক্সের কাছে পাইপের মাধ্যমে ওই জল একাধিক জলাধারে ধরে রাখা হচ্ছে।
এ পর্যন্ত পাওয়া হিসাব থেকে রেলকর্তারা দেখেছেন, ওই এলাকায় বছরে প্রায় ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। যা থেকে প্রায় ৯৭ হাজার ৫২৪ ঘনমিটারের মতো জল মেলে। সেই জলের একাংশকে ভূগর্ভে ফেরত পাঠাতে প্রায় ২০ হাজার লিটারের একটি ভগ্ন জলাধারকে ব্যবহার করছে রেল। সেখানে নুড়িপাথর, বালি এবং কাঠকয়লার স্তর তৈরি করে বৃষ্টির জলকে কিছুটা পরিস্রুত করা হচ্ছে। এর পরে ওই জলাধারের মাধ্যমেই দৈনিক প্রায় ২০ হাজার লিটার জল ভূগর্ভে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সারা বছরে ভূগর্ভে ফিরিয়ে দেওয়া ওই জলের পরিমাণ প্রায় ৭৩ লক্ষ লিটার।
অন্য দিকে, সারা বছরে সংগৃহীত জলের পরিমাণ প্রায় ৯ কোটি ৭৫ লক্ষ লিটার। ভূগর্ভে ফেরত পাঠানো জলের অংশ বাদ রেখে, বাকি জল শোধন করে সারা বছর ধরে স্টেশন, ট্র্যাক, প্ল্যাটফর্মের পরিসর, ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখার লাইন ধোয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই জলকে বিভিন্ন ভাবে পুনর্ব্যবহার করায় হাওড়া স্টেশনে সাফাইকাজের জন্য ভূগর্ভস্থ মিষ্টি জলের ব্যবহার বন্ধ করা গিয়েছে বলেও জানাচ্ছেন রেলের কর্তারা।
প্রসঙ্গত, রেলের বিভিন্ন ইয়ার্ডে ট্রেন পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে শোধন করে জলের পুনর্ব্যবহার আগেই শুরু হয়েছিল। তবে ব্যাপক হারে বৃষ্টির জল ধরে রেখে তার সুষ্ঠু ব্যবহার এবং একাংশকে ভূগর্ভে ফিরিয়ে দেওয়ার এই উদ্যোগ অভিনব বলেই দাবি করছেন রেলকর্তারা। গত কয়েক বছর ধরে হাওড়া স্টেশনে জল এবং শক্তির পুনর্ব্যবহারের পরিকাঠামো উন্নত করার কাজ চলেছে। সে জন্য ইন্ডিয়ান গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের
প্ল্যাটিনাম রেটিংও পেয়েছে এই স্টেশন।