—প্রতীকী চিত্র।
একই ছবি ফিরে ফিরে আসে! কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের তহবিল খরচ করতে কালঘাম ছোটে পঞ্চায়েতের। এ বারেও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের ওই তহবিলের অধীনে থাকা সব প্রকল্প রূপায়ণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
ওই টাকার বেশি খরচ হয় ‘আনটায়েড ফান্ড’ বা নিঃশর্ত তহবিল। ‘টায়েড ফান্ড’ (শর্তাধীন তহবিল) পড়েই থাকে। হুগলির ২০৭টি পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেই এই চিত্র কমবেশি এক। একটি খাতের টাকা শেষ করতে না পারলে, পরবর্তী অর্থবর্ষের টাকা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। সেই কারণে সময়ের শেষ দিকে পড়ে থাকা টাকা দ্রুত খরচের নির্দেশ দেয় রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।
সম্প্রতি পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নির্দেশ, ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের ই-গ্রামস্বরাজ পোর্টালে ‘আপলোড’ করা বার্ষিক পরিকল্পনাগুলির দরপত্র ডাকতে হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। দরপত্র প্রক্রিয়া ২৫ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে৷ একই দিনে কারিগরি এবং আর্থিক অনুমোদন সুনিশ্চিত করতে হবে। ওয়ার্ক-অর্ডার দিতে হবে ২ থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে। ১০ অক্টোবর ডিসপ্লে বোর্ড লাগিয়ে পুরোদমে কাজ শুরু করতে হবে।
এ নিয়ে ব্লক এবং পঞ্চায়েতে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। হুগলির একাধিক বিডিও জানিয়েছেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর অর্থ কমিশনের টাকা ঢুকেছে। ওই তারিখের মধ্যে দরপত্র ডাকা যায়নি। গত ২৫ সেপ্টেম্বর সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে, কাজ শুরু নির্দিষ্ট সময়েই করা যাবে বলে তাঁদের আশা। বিডিও এবং পঞ্চায়েত আধিকারিকরা জানান, নিঃশর্ত তহবিলে পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজের (রাস্তা, পুকুরঘাট নির্মাণ, আলো, শ্মশানের ছাউনি ইত্যাদি) দরপত্র ডাকা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, এপ্রিলে নতুন অর্থবর্ষ (২০২৩-’২৪) শুরু হলেও নির্বাচনের আবহে পঞ্চায়েত সদস্যদের বনিবনার অভাবে বা শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে সাধারণ সভায় বার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদনে দেরি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই সভায় এক তৃতীয়াংশ উপস্থিতিও না থাকায় খাতায়-কলমে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছিল না। তাই প্রকল্পের বিস্তারিত বার্ষিক পরিকল্পনা পোর্টালে নথিভুক্ত করতে অনেকটাই দেরি হয়।
জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া চলছে। নির্দিষ্ট সময়েই কাজ শুরু হবে। এ বার স্বচ্ছ ভারত মিশনের মেলবন্ধনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ টায়েড ফান্ড থেকে করা যাবে। ফলে ওই তহবিল খরচও যথাযথ হবে। তবে দেরি হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, বিগত অর্থবর্ষের অর্থ কমিশনের দ্বিতীয় কিস্তি-সহ ২০২৩-’২৪ সালে হুগলির পঞ্চায়েতগুলি টাকা পেয়েছে ১৩৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। খরচ হয়েছে ৭৫ কোটি ৮৬ লক্ষ। শতাংশের হিসাবে ৫৪.৩৫ শতাংশ। পঞ্চায়েত সমিতি ৫০.৮২% এবং জেলা পরিষদ ৪৮.১৮% টাকা খরচ করতে পেরেছে।