—প্রতীকী ছবি।
এক তৃণমূল কর্মীর বাড়ি লাগোয়া মুদির দোকানে গভীর রাতে আগুন লাগল। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে ডোমজুড় ব্লকের সলপ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তেঁতুলকুলিতে। মৌমিতা প্রামাণিক নামে ওই তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, তাঁর দোকানে আগুন লাগানো হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়ির আশপাশে লাগানো দলীয় পতাকা। ঘটনার সময়ে দোকানের ভিতরে শুয়েছিলেন মৌমিতার শাশুড়ি। তিনি কোনও রকমে বেরিয়ে এসে প্রাণে বাঁচেন। ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার আসে ডোমজুড় থানার পুলিশ। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। শাসকদলের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে হিংসা ছড়াচ্ছে বিরোধীরা। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম ও বিজেপি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই তৃণমূল কর্মীর বাড়ি লাগোয়া মুদির দোকানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। তা দেখে মৌমিতার বাড়ির লোকজনই বালতি করে জল ঢেলে আগুন নেভান। জামাকাপড়-সহ বেশ কিছু আসবাব পুড়ে যায়। এ দিন সকালে অগ্নিকাণ্ডের খবর জানাজানি হতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দা-সহ তৃণমূলের সমর্থকেরা মৌমিতার বাড়ির সামনে ভিড় করেন।
মৌমিতার অভিযোগ, ‘‘আমাদের ধারণা, রাত তিনটে নাগাদ দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সময়ে দোকানে আমার শাশুড়ি শুয়েছিলেন। তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। পেট চালাতে অনেক কষ্টে দোকানটা করেছিলাম। তৃণমূল করি বলে বিজেপি এবং সিপিএম মিলে দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দিল। পাশেই আমার বাড়িতেও হামলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, কিছু করতে পারেনি। গ্রামের আশপাশে লাগানো দলীয় পতাকা পুড়িয়ে দিয়েছে।’’
ঘটনার খবর পেয়ে এ দিন তেঁতুলকুলিতে আসেন তৃণমূলের হাওড়া জেলা সদর সভাপতি কল্যাণ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আগে এই বুথে বিরোধীদের দাপট ছিল। এখন মানুষ তা প্রতিরোধ করেছেন। মানুষের পাশে মৌমিতা রয়েছেন বলে বিরোধীদের সহ্য হচ্ছে না। তাই ওঁর পরিবারের উপরে হামলা চালিয়েছে ওরা। মৌমিতার শাশুড়িকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করুক।’’
যদিও শাসকদলের তোলা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি ও সিপিএম। বিজেপির শ্রীরামপুর লোকসভা কমিটির সদস্য জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। ওরাই নিজেদের দলের কর্মীর বাড়িতে হামলা করেছে। চক্রান্ত করে এই ঘটনায় বিরোধীদের নাম জড়ানো হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করুক, সত্যিটা বেরিয়ে আসবে।’’
একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উত্তম বেরার মুখে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দল হিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ঘটনার নিন্দা করছি। এটা তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফল। পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করলেই সত্যি বেরিয়ে আসবে।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঠিক কী ভাবে আগুন লাগল, তা স্পষ্ট নয়। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’