ঘুরে দাঁড়াতে নতুন পরিকল্পনা। — নিজস্ব চিত্র।
সদ্য চালু হয়েছে হাওড়া পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা। নদীর তলা দিয়ে এখন দিব্য চলে যাওয়া যাচ্ছে কলকাতা থেকে হাওড়া। আরামদায়ক সেই সফর চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ফেরি পরিষেবার কপালে। ইদানীং দেখা যাচ্ছে, হাওড়া স্টেশন থেকে বেরিয়ে মানুষ লঞ্চে ওঠার পরিবর্তে ট্রেন বদলেই পৌঁছে যেতে পারছেন কলকাতার গন্তব্যে। এতে মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ফেরি পরিষেবার। তা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এ বার নয়া উদ্যোগ নিচ্ছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমিতি।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে উদ্বোধন হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর হাওড়া পর্যন্ত পথের। এখন ধর্মতলা থেকে এক মেট্রোতেই অনায়াসে পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে হাওড়া স্টেশন বা হাওড়া ময়দান। যাকে মহানগরীর গণপরিবহণের পটচিত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসাবেই অভিহিত করছেন অনেকে। কিন্তু এই অগ্রগতির প্রদীপের তলায় অন্ধকারও আছে। ঠিক যেমন, লঞ্চ পরিষেবা। এত দিন, হাওড়া স্টেশন থেকে কলকাতা পৌঁছনোর জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক পথ ছিল ফেরি পরিষেবা। কিন্তু মেট্রো চালু হওয়ায় লঞ্চে আর ভিড় হচ্ছে না। ক্রমশ তার প্রভাব পড়ছে দৈনন্দিন পরিষেবাতেও। এই পরিস্থিতিতে অন্ধকার কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নিল হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমিতি। চালু হচ্ছে নতুন রুট। এমন রুট, যেখানে মেট্রো যায় না।
হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন ফেরিঘাট থেকে বাবুঘাট, চাঁদপাল ঘাট, আর্মেনিয়ান, শোভাবাজার, বাগবাজার-সহ কয়েকটি ঘাটে ফেরি পরিষেবা রয়েছে। যা হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমিতির অধীনে। এমনিতে বিভিন্ন জটিলতার কারণে এই সংস্থা ধুকছিল। মাসখানেক আগে নতুন বোর্ড দায়িত্ব নেয়। সংস্থাকে চাঙা করার চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মেট্রো চালু হওয়ার পর আরও সমস্যা বৃদ্ধি পায়। যাত্রীসংখ্যা হু-হু করে কমতে থাকে লঞ্চে। আয়ও কমতে থাকে। তাই নতুন পরিকল্পনা বলে জানান সংস্থার নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যান রাইচরণ মান্না। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া থেকে কাশীপুর রুটে লঞ্চ চালানো হবে। এই রুটের ভাল চাহিদা আছে। এ ছাড়া প্রয়োজনে পণ্য পরিবহণকারী লঞ্চও চালানো হবে। এতে আয়ও বাড়বে।’’
বোর্ড সদস্য অজয় দে জানান, ১৯টি লঞ্চ নতুন করে দ্রুত সারিয়ে ফের চালু করা হবে। এতে যাত্রী পরিষেবা বাড়বে।