ক্ষোভের মুখে দূতেরা। বৃহস্পতিবার বৈদ্যবাটীর মাটিপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ‘দিদির দূত’দের। বৃহস্পতিবার থেকে হুগলির পুর এলাকাতেও শুরু হয়েছে তৃণমূলের এই কর্মসূচি। প্রথম দিন বৈদ্যবাটীর এনসি ব্যানার্জি রোডে (মাটিপাড়ায়) গিয়ে সেখানকার একটি পুকুর ভরাট এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়তে হল ‘দূত’ হিসেবে যাওয়া পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো, পুর-পারিষদ (জলকল) সমর বাগচী এবং দুই কাউন্সিলর— শম্পা সরকার ও শতরূপা চক্রবর্তীকে।
মোট ছ’টি ওয়ার্ডে (১৩, ১৪, ১৫, ১৭, ২২ ও ২৩) এ দিন ওই কর্মসূচি হয়। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাটিপাড়া গাজন সমিতির মন্দিরে পুজো দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন পিন্টুবাবুরা। শুরুতেই তাঁকে এলাকাবাসীর ক্ষোভের কথা শুনতে হয়। কাউন্সিলরের পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করালে তবেই আবাস যোজনার টাকা অনুমোদন হচ্ছে বলে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এলাকার একটি পুকুর ভরাট করে অবৈধ ভাবে নির্মাণের অভিযোগও শুনতে হয় পিন্টুকে।
পুরপ্রধান জানান, আবাস যোজনার ক্ষেত্রে পুরসভার তরফে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় না। বেআইনি পুকুর ভরাট ও অবৈধ নির্মাণের বিয়ে অবশ্য তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে থেকেই ওই এলাকার একটি পুকুরের কিছু অংশ ভরাট করে নির্মাণ কাজ হচ্ছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নির্মাণ বন্ধ করে দেয় পুরসভা। চলতি বছর ফের ওই পুকুরের কিছু অংশ ভরাট করে নির্মাণ শুরু করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। এ বিষয়ে পুরসভায় লিখিত ভাবে জানিয়েও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁদের দাবি, অবৈধ নির্মাণ সরিয়ে ফেলে পুকুর সংস্কারের ব্যবস্থা করুক পুরসভা।
রাম দত্ত নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর ক্ষোভ, ‘‘আমি আগের পুরবোর্ডের সময়ে ওই পুকুরের পাড়ে একটি ঘর তৈরি করছিলাম। পুরসভা আটকে দেয়। এখনও ওই ঘর আগের অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। আমার ক্ষেত্রে যদি অবৈধ নির্মাণ হয়, তা হলে ওই একই দাগের পুকুর পাড়ে বর্তমানে ঘর তৈরি হচ্ছে কী ভাবে?’’
ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবরাজ দত্ত নির্দল। তাঁর পছন্দমতোঠিকাদার নিয়োগের অভিযোগ তিনি মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘ওয়ার্ডে সব মিলিয়ে ৭৫টি আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি তৈরি হচ্ছে। পুরসভা থেকে যে টাকা এই ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ করা হচ্ছে, তা খুবই সামান্য। যে সব উপভোক্তা খোলা আকাশের নীচে পলিথিন টাঙিয়ে অথবা ভাড়াবাড়িতে রয়েছেন, তাঁদের অগ্রাধিকারদেওয়া হচ্ছে।’’
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘‘আবাস যোজনার বাড়ির তৈরির ক্ষেত্রে কোনও ঠিকাদারকে পুরসভা নিযোগ করে না। উপভোক্তরাই তাঁদের সুবিধার্থে ঠিকাদার নিয়োগ করেন। এর দায় তাঁদেরই। তবে, পুকুর ভরাট নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কোনও বেনিয়ম দেখি, আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুরসভা পুকুরের অংশে কোনও রকম নির্মাণ করার অনুমোদন দেয়নি।’’