হাওড়া পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
চলতি বছরেও হাওড়ায় ভাল রকম দাপট দেখিয়েছে ডেঙ্গি। মশাবাহিত এই রোগ নিয়ন্ত্রণের কাজ অনেকটাই নির্ভরশীল মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরে। সেই ডেঙ্গি প্রতিরোধ সহায়িকারা নিয়মিত বেতন না মেলার প্রতিবাদে সোমবার পুরসভার চেয়ারপার্সনের অফিসের সামনে বিক্ষোভে শামিল হলেন। এ দিন কয়েকশো মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পুর ভবনে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন পুরসভার সাফাইকর্মীরাও। ওই কর্মীরা দাবি তোলেন, তাঁদের দৈনিক মজুরি ১৭৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০২ টাকা করার যে ঘোষণা করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ, তা লিখিত আকারে দিতে হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষমেশ পুলিশ ডাকতে হয় পুর কর্তৃপক্ষকে।
প্রসঙ্গত, বোর্ড গঠন করার পরে স্বাস্থ্যকর্মী পদে সাড়ে তিন হাজার মহিলাকে নিয়োগ করেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তাঁদের কাজ ছিল বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের সচেতন করা। পরে এঁদের মধ্যে অধিকাংশ স্বাস্থ্যকর্মীকে ডেঙ্গি প্রতিরোধ সহায়িকা হিসাবে ৫০টি ওয়ার্ডে ভাগ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে এই কর্মীরা কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের কাজের আওতায় দৈনিক ১৬৪ টাকা করে মজুরি পান।
স্বাস্থ্যকর্মী সুমিত্রা রায়, মঞ্জুশ্রী দত্তদের অভিযোগ, ডেঙ্গি প্রতিরোধে এলাকা পরিষ্কার রাখা হচ্ছে কি না, তাঁরা বছরভর সে দিকে নজর তো রাখেনই, সেই সঙ্গে বিভিন্ন বহুতলে গিয়ে আবাসিকদের সচেতন করেন এবং মশা মারার তেল ও ওষুধ ছড়িয়ে আসেন। কিন্তু তার পরেও তাঁদের বেতন অনিয়মিত। কখনও ১০ দিনের, কখনও ১৫ দিনের বেতন ধরানো হচ্ছে। অবিলম্বে বেতন নিয়মিত না করলে ২৫ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এ দিন যখন ডেঙ্গি প্রতিরোধ সহায়িকাদের বিক্ষোভ চলছে, তখন সেখানে হাজির হয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন পুরসভার কিছু সাফাইকর্মী। দু’দলের এই বিক্ষোভ সামাল দিতে ছুটে আসে পুলিশ। পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী।
বৈঠকের পরে চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধ সহায়িকাদের বেতনের একটি অংশ দেয় পুরসভা। বাকিটা দেয় রাজ্য, কেন্দ্রের থেকে টাকা পাওয়ার পরে। এখন
কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দেওয়ায় রাজ্য তার অংশ দিতে পারছে না। আমরা শুধু আমাদের অংশ দিচ্ছি।’’ তবে সাফাইকর্মীদের দাবি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে লিখিত ভাবে কিছু দেওয়া সম্ভব নয়।