ঠাসাঠাসি: ট্রেনে ওঠার সময়। ফাইল চিত্র।
হাওড়া ও শিয়ালদহের পাশাপাশি রেলের নতুন টার্মিনাল গড়তে ডানকুনির দিকে নজর দিয়েছেন পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনা কার্যকর হলে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো আধুনিক প্রযুক্তির ট্রেন এখান থেকেই চলবে। কিন্তু, ডানকুনি থেকে শিয়ালদহের মধ্যে লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের দুর্দশা ঘুচবে কবে?
যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে ভারতীয় রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছে নাগরিক সংগঠন ‘সারা বাংলা সিটিজেন্স ফোরাম’। পর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের হাতে বুধবার ওই স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়। ওই সংগঠনের দাবি, সকাল-সন্ধ্যায় অফিস টাইমে অন্তত দু’টি করে অর্থাৎ, কমপক্ষে ৪টি লোকাল ট্রেন বাড়াতে হবে। প্রত্যেকটি লোকাল ৯ থেকে বাড়িয়ে ১২ কামরার করতে হবে।
সিটিজেন্স ফোরামের সভাপতি শৈলেন পর্বতের ক্ষোভ, ‘‘ডানকুনি-শিয়ালদহ শাখা রেলের কাছে বরাবর অবহেলিত। যাত্রী টিকিট কেটে পরিষেবা পান। তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কী ভাবে উদাসীন থাকতে পারেন?’’
হাওড়া এবং শিয়ালদহ— দুই শাখাতেই ডানকুনি যুক্ত। সল্টলেক, শিয়ালদহ-সহ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য বহু মানুষ ডানকুনি-শিয়ালদহ শাখা ব্যবহার করেন। তাঁদের অভিযোগ, ট্রেন পর্যাপ্ত না থাকায় গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হয়। মধ্যবর্তী স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার উপায় থাকে না। বয়স্কদের পক্ষে যাতায়াত করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। সমস্যায় পড়েল মহিলা এবং ছোটরাও। আকছার দুর্ঘটনা ঘটে।
স্মারকলিপিতে ফোরামের অভিযোগ, শিয়ালদহ যেতে ডানকুনি থেকে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটের পরের লোকাল ৮টা ৪৪ মিনিটে। তার পরে ৯টা ৫০ মিনিটে। অর্থাৎ, মাঝের এক ঘণ্টা করে ফাঁকা। একই ভাবে, সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফেরার সময়ে ডানকুনি আসার লোকাল শিয়ালদহ থেকে ছাড়ে ৬টা ৮ মিনিটে। তার পরে ৭টা ৭ মিনিটে। তার পরে ৮টা ৪২ মিনিটে। ব্যস্ত সময়ের এই ট্রেনগুলির মাঝে অন্তত একটি করে লোকাল ট্রেন অবিলম্বে বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।
ভুক্তভোগীদের আরও অভিযোগ, এই শাখায় বেশির ভাগ লোকাল এখনও নয় কামরার। স্মারকলিপিতে এই সমস্যার কথা তুলে ধরে ১২ কামরার লোকাল চালানোর দাবি জানানো হয়েছে। হন্দমোটরের বাসিন্দা সঞ্জয় পাল বলেন, ‘‘বহু বছর এই শাখায় যাতায়াত করি। বালি হল্ট থেকে ট্রেন ধরি। ধাক্কাধাক্কি করে উঠতে হয়। প্রচণ্ড ভিড়ে ট্রেনে ওঠার সময় আমার মানিব্যাগ ছিনতাই পর্যন্ত হয়েছে। গরু-ছাগলের পালের থেকেও খারাপ অবস্থা হয়।’’ এই ক্ষোভ অনেকেরই।
ফোরামের সদস্য কবিতা দে জানান, পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বছর খানেক আগে শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে (ডিআরএম) স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, পরিস্থিতির হেরফের হয়নি। সেই কারণেই, রেল বোর্ডে স্মারকলিপি দেওয়া হল। পর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকেও প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে।