করোনাবিধি না মেনে ভিড়ে ঠাসাঠাসি যাতায়াত।
করোনার দৈনিক সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে রবিবার ১২০০-র ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল হুগলিতে। সোমবার তা হাজারের নিচে নেমেছিল। মঙ্গলবার ফের সংক্রমণ কিছুটা হলেও মাথাচাড়া দিয়েছে। এ দিনের সরকারি বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, সংক্রমিত হয়েছেন ১৩০৫ জন। আগের দিনের তুলনায় এই সংখ্যা ৩৭১ জন বেশি। তবে, শয্যার অনুপাতে সংক্রমিতদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কম।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলার মোট ৫১২টি কোভিড শয্যার মধ্যে মঙ্গলবার মাত্র ৬৪টিতে রোগী ভর্তি ছিল। বিষয়টি নিশ্চিত ভাবেই স্বস্তি দিচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। তবে, তাঁদের বক্তব্য, সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে বেশি সংখ্যক মানুষের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। সেই পরিস্থিতি যাতে না হয়, তার জন্য সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ ভাবে মেনে চলতে হবে। জেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি শহরে করোনার দাপট চলছেই।
তৃতীয় ঢেউয়ে করোনা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে, এটা বাস্তব। কিন্তু চিকিৎসকদের অভিমত, সংক্রমণের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হচ্ছে কম। সংক্রমণের হারের নিরিখে যদি রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও পাল্লা দিতে থাকত, তা হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এক প্রকার অসম্ভব হত।
জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী ভর্তির ছবিটা কেমন?
উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে করোনা শয্যা ৯০টি। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সেখানে রোগী ভর্তি ছিলেন ১২টি শয্যায়। আরামবাগ হাসপাতালে ৯৫টি কোভিড শয্যা। এ দিন সেখানে ১১ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে মঙ্গলবার বিকেলে ১২ জন করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, গত ১০ দিন ধরে এই সংখ্যা দৈনিক ১০ থেকে ১৫ জনের মধ্যে থাকছে। এই হাসপাতালে কোভিড বিভাগে মোট ৫০টি শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে ১০টি শয্যা শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট। তবে, যে রোগীরা ভর্তি রয়েছেন, সকলেই প্রাপ্তবয়স্ক। শিশুদের শয্যা ফাঁকাই রয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, কিছু ক্ষেত্রে কো-মর্বিডিটির কারণে রোগীদের শারীরিক জটিলতা হচ্ছে।
তবে, উত্তরপাড়া, চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগরে করোনার প্রকোপ যথেষ্ট রয়েছে। উত্তরপাড়া শহরের ২০টি ওয়ার্ড ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকা (কনটেনমেন্ট জ়োন) হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। যদিও, পরিস্থিতির বিশেষ রদবদল হয়নি। একই ভাবে শ্রীরামপুরের ১০টি, চন্দননগরের ৯টি এবং চুঁচুড়ার ৫টি ওয়ার্ড ‘গণ্ডিবদ্ধ’। উত্তরপাড়ার পুর-প্রশাসক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আমরা মানুষের সচেতনতায় প্রচারের পাশাপাশি মাস্ক বিলিও করছি। কিন্তু সব ক্ষেত্রে মানুষজন মাস্ক ব্যবহার করছেন, তেমনটা বলতে পারি না। করোনার প্রকোপের কারণ কিন্তু এই অসচেতনতা।’’