Hemophilia B

আবার ‘হিমোফিলিয়া বি’র ওষুধের সঙ্কট হুগলিতে

হুগলিতে কেবল আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতলে এই চিকিৎসা হয় এবং সেখান থেকেই ওই ইঞ্জেকশনটি মেলে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

পীষূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:১৬
Share:

—প্রতীকী ছবি

মাস চারেক কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু গত মাস থেকে ফের হুগলিতে ‘হিমোফিলিয়া বি’ রোগে (রক্ত জমাট না বাঁধা) আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় ‘ফ্যাক্টর ৯’ ইঞ্জেকশনটি কার্যত মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বেশিরভাগ রোগীকে কলকাতার হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। অনেকে আবার যেতে পারছেন না। গত এপ্রিল ও মে মাসেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বারবার এই সমস্যায় ক্ষুব্ধ রোগীরা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন।

Advertisement

হুগলিতে কেবল আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতলে এই চিকিৎসা হয় এবং সেখান থেকেই ওই ইঞ্জেকশনটি মেলে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে বাতানল গ্রামের সুব্রত সাঁতরার অভিযোগ, “আমাদের মাসে চারটি করে ইঞ্জেকশন দরকার। মাস খানেকের উপর হয়ে গেল, সরকারি ভাবে একেবারেই সরবরাহ নেই। হাসপাতাল থেকে যদি মাসে অন্তত দু’টো করেও কেনা যেত, তা হলেও কষ্টটা হত না।”

ইঞ্জেকশনটির ঘাটতির কথা স্বীকার করেছেন আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায়। তিনি বলেন, “ইঞ্জেকশনটি সরবরাহ নেই মাসখানেক হয়ে গেল। দামি ওই ইঞ্জেকশন বাজারে পাওয়া যায় না। বেশ কয়েকজন রোগীর গুরুত্ব বুঝে তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে কালকাতার হাসপাতালগুলিতে (হেমাটোলজি বিভাগ থাকা এনআরএস এবং মেডিক্যাল কলেজ) পাঠিয়েছি। আশা করছি, শীঘ্রই এসে যাবে।” তবে, চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালের ক্ষেত্রে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইয়ার দাবি, ‘‘কিছু ওষুধ আছে। মেডিক্যাল কলেজের সমস্যার বিষয়টি রাজ্য স্তর থেকে দেখা হয়।’’

Advertisement

নালিকুলের রোগী রবিন সাঁতরা এবং চন্দননগরের কৃষ্ণচন্দ্র দাস চুঁচুড়া হাসপাতালেই চিকিৎসা করান। রবিনের অভিযোগ, তিনি প্রতি সপ্তাহে আরামবাগ এবং চুঁচুড়া হাসপাতালে যেখানে ওষুধ থাকার খবর পান, সেখানেই যান। কিন্তু এখন কোথাও নেই বলে জানানো হয়েছে। কৃষ্ণচন্দ্র বলেন, “প্রতি সপ্তাহে একটি করে ইঞ্জেকশন নিতে হয়। কিন্তু বছরভর সরবারহ কম থাকায় মাসে বড় জোর দু’টি করে মিলছে। সপ্তাহখানেক হয়ে গেল সরবরাহ একেবারেই বন্ধ।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রোগের দু’টি ভাগের মধ্যে ‘হিমোফিলিয়া এ’-র চিকিৎসা পরিষেবা যথাযথ মিলছে। আক্রান্তেরা জানিয়েছেন, তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ফ্যাক্টর ৮’ ইঞ্জেকশন দু’টি হাসাপাতালেই মিলছে। সমস্যায় পড়েছেন ‘হিমোফিলিয়া বি’-তে আক্রান্তেরা। জেলায় হিমোফিলিয়ার দু’টি বিভাগ মিলিয়ে রোগীর সংখ্যা প্রায় ৯০। তার মধ্যে ২৩ জন ‘হিমোফিলিয়া বি’-তে আক্রান্ত।

সমস্যায় পড়া রোগীরা জানান, শুধু রক্ত জমাট না বাঁধাই নয়, এই রোগে শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ বেঁকে যায়। গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা হয়। রাতে ঘুম হয় না। আরামবাগের ভালিয়া গ্রামের রমা দিগেরের ক্ষোভ, “শুধু ইঞ্জেকশন না পেয়ে আমার তেইশের বছরে ছেলের কোমর প্রায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছে। ওকে নিয়ে কি প্রতি সপ্তাহে কলকাতা যাওয়া সম্ভব?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement