Indian Railways

ভাবাদিঘিতে ফের রেলের কর্তারা, কাটল না জট

মবাসীরা ওই দিঘির (দিঘির নামেই গ্রামের নাম) একাংশ বুজিয়ে রেলপথ নির্মাণে আপত্তি তুলে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন। তাঁরা চান, দিঘি আস্ত রেখে উত্তর দিকের পাড় বরাবর রেললাইন পাতা হোক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৭
Share:

রেলের পদস্থ অফিসাররা ভাবাদীঘি এলাকা ঘুরে দেখলেন। গোঘাটে।  গোঘাটে। 

এ বার পূর্ব রেলের নির্মাণ বিভাগের কর্তারা এলেন। ভাবাদিঘির আন্দোলনকারীরা আশা করেছিলেন, এ বার তাঁদের দাবি মান্যতা পাবে। কিন্তু তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর রেল সংযোগের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে থাকা গোঘাটের ‘ভাবাদিঘি জট’ কাটল না বৃহস্পতিবারেও। রেলকর্তারা ভাবাদিঘি থেকে এ দিন পশ্চিম অমরপুরেও যান। সেখানে সমস্যা কাটানোর আশ্বাস মিলেছে।

Advertisement

এর আগে ভাবাদিঘি পরিদর্শন করে গিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার, হাওড়ার ডিভিশনাল ম্যানেজার। গ্রামবাসীরা ওই দিঘির (দিঘির নামেই গ্রামের নাম) একাংশ বুজিয়ে রেলপথ নির্মাণে আপত্তি তুলে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন। তাঁরা চান, দিঘি আস্ত রেখে উত্তর দিকের পাড় বরাবর রেললাইন পাতা হোক।

এ দিন পূর্ব রেলের যাবতীয় নির্মাণকাজের পরিকল্পনা এবং সম্পাদনের দায়িত্বে থাকা মুখ্য প্রশাসনিক কর্তা পি কে শর্মার নেতৃত্বে চিফ ইঞ্জিনিয়ার (১) মনোজ খান, ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনায়ার কদম সিংহ মিনা প্রমুখ কর্তারা আসায় ভাবাদিঘির মানুষ ভেবেছিলেন, তাঁদের দাবির কথা বিবেচনা করে নতুন করে নকশার পরিকল্পনা হবে। কিন্তু তা হয়নি।

Advertisement

এলাকা পরিদর্শনের পর গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় মনোজ খান জানিয়ে দেন, রেলপথের নকশা (অ্যালাইনমেন্ট) বদল সম্ভব নয়। গ্রামবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আলোচনা মাঝপথে ভেস্তে যায়। ‘দিঘি বাঁচাও কমিটি’র সম্পাদক সুকুমার রায়ের অভিযোগ, “এ বার রেলের নির্মাণ বিভাগের কর্তারা আসছেন শুনে মনে হয়েছিল, সমস্যা মিটবে। কিন্তু তাঁরা আগের নকশা অনুযায়ীই কাজ করতে চান। তারপর আর কথা চালিয়ে লাভ নেই।’’

চিফ ইঞ্জিনিয়ার (১) মনোজ বলেন, “খালি ভাবাদিঘির সমস্যর জন্য আমরা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্তের সামনে থমকে আছি। আলোচনার সময় গ্রামবাসীরা সবাই উত্তেজিত হয়ে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। ফলে, আলোচনা বিশেষ এগোয়নি।” গ্রামবাসীকে কী বলতে চেয়েছিল রেল? মনোজ জানান, দিঘির এক প্রান্তে জলের কিছুটা অংশ নিয়ে লাইনটা যাবে। সেই নকশা বদল করা যাবে না। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, তাঁদের জলাশয়ের আয়তন কমে যাবে। রেলপথের নকশা বদলে অসুবিধা প্রসঙ্গে দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, দিঘির পূর্বে ৩০০ মিটার এবং পশ্চিমে ৩৫০ মিটার দূরেই দু’টি সেতু করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি অনুযায়ী মাত্র সাড়ে ৬০০ মিটারে মধ্যে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি লাইন বাঁকানো দরকার। যা একেবারেই সম্ভব নয়।

ইতিমধ্যে পূর্ব রেলের তরফে রাজ্য এবং জেলা প্রশাসনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তারা জায়গা দিলে রেলপথের জন্য যেটুকু জলাশয় নেওয়া হবে, তার থেকে বড় জলাশয় বানিয়ে দেওয়া হবে। গাছ কাটা পড়লে গাছ লাগিয়ে দেওয়া হবে।

গোঘাটেরই পশ্চিম অমরপুরে ওই রেলপথের জন্য জমির দাম নিয়ে সমস্যা কেটে গেলেও নিচু এলাকায় জল নিকাশির জন্য রেলপথের প্রায় ১ কিমি অংশে সেতুর দাবি থেকে সরেনি এখানকার ‘রেল চালাও,
গ্রাম বাঁচাও’ কমিটি। এ দিন
রেলকর্তারা পুরো এলাকা পরিদর্শন করে সরাসরি সেতু নির্মাণের কথা না বললেও জল নিকাশির ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।

আন্দোলনকারী কমিটির উপদেষ্টা ফটিক কাইতি বলেন, “আমাদের জল নিকাশির দাবির সঙ্গে ওঁরা সহমত প্রকাশ করেছেন। কী ভাবে তা করবেন, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে ফের আগামী শনিবার তাঁরা আসবেন বলেছেন।” পশ্চিম অমরপুরের সমস্যা কেটে যাবে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement