আমতা পশ্চিম অবর বিদ্যালয়ের পরিদর্শকের অফিস থেকে কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন নিয়ে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে (সার্কেল ইনস্পেক্টর বা এসআই) হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের দুই নেতার বিরুদ্ধে। হাওড়ার আমতা পশ্চিম চক্রের ঘটনা। ওই দুই শিক্ষক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কার্যালয়ের টেবিলে থাকা কাগজপত্র ছিঁড়ে, তছনছ করেনবলে অভিযোগ। এমন একটিভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে (আনন্দবাজার তার সত্যতা যাচাই করেনি)।
তবে ঘটনার জেরে শোরগোল পড়েছে শিক্ষক মহল এবং শিক্ষা দফতরের অন্দরে। তৃণমূলের শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। গোলমালের কথা স্বীকার করে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘দু’পক্ষের থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। আগামী মঙ্গলবার দু’পক্ষকে শুনানির জন্য ডাকা হয়েছে। সরকারি দফতরে এমন কাজ বরদাস্ত করা হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সংযুক্তা মণ্ডল এবং পার্থ নন্দী ও সঞ্জয় বাগ নামে ওই দুই শিক্ষক— কারও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। একাধিক বার ফোন করা হলেও তিন জনের কেউ ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলে জবাব আসেনি।
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, গত বুধবার পার্থ ও সঞ্জয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয়ে যান। প্রধান শিক্ষক পদের আবেদন নিয়ে দু’পক্ষের বাক্বিতণ্ডা হয়। অভিযোগ, তখনই টেবিল থেকে সমস্ত আবেদনপত্র ছিঁড়ে, ছুড়ে ফেলে দেন শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের ওই দুই নেতা। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানান অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক।
হাওড়া জেলা তৃণমূল শিক্ষা সেলের সভাপতি নির্মল যাদব বলেন, ‘‘ওই দুই শিক্ষককে বকাবকি করেছি। এমন কাজ দল সমর্থন করে না। যত দূর শুনেছি, আবেদনপত্র জমার শেষ তারিখ ছিল ৮ সেপ্টেম্বর। এরপরেও কয়েক জন আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। সেখানেই আপত্তি তুলেছিলেন ওই দুই শিক্ষক-নেতা। এই নিয়ে বচসা হয়। তবে আবেদনপত্র ছেঁড়া বা ছুড়ে ফেলার কথা শুনিনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ঘটনা যা-ই হোক, সাংগঠনিক স্তরে তদন্ত করা হচ্ছে।’’
বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য নেতা পিন্টু পাড়ুই বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সর্বত্রই তৃণমূল দাদাগিরি করছে। ওদের শিক্ষক সংগঠনের নেতারা কোনও নিয়মকানুন মানছেন না। ওঁদের অনুমতি না নিয়ে আবেদন করা যাবে না, এ নিয়েই ওঁরা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে হেনস্থা করেছেন। নিয়োগ যদি সঠিক ভাবে না হয়, তা হলে আমরা দলের পক্ষ থেকে আদালতের দ্বারস্থ হব।’’ ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ মানেননি তৃণমূলের শিক্ষা সেলের নেতারা।।