জয়ঢাক: ঘোষণা শেষে আবির খেলা। নিজস্ব চিত্র।
শাসকদল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের সভার এক দিন পরেই অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের মজুরি বাড়ানোর কথা ঘোষণা হল হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায়। শুক্রবার পুর-প্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় জানান, পুরসভার কোষাগারে সঙ্কট চলছে। তা সত্ত্বেও অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের কথা ভেবে মজুরি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আগামী আর্থিক বছরের শুরু অর্থাৎ আগামী এপ্রিল মাস থেকে দৈনিক ২০ টাকা মজুরি বাড়ানো হবে।
এর কৃতিত্ব দাবি করেছে নবগঠিত শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা। শুক্রবার ওই ঘোষণার পরেই তাঁরা সবুজ আবির খেলেন। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনরত অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের অবশ্য অভিযোগ, নির্বাচনের আগে রাতারাতি সংগঠন গড়ে মজুরি বৃদ্ধি করার পিছনে ভোটের রাজনীতি রয়েছে। একই দাবি বিরোধীদেরও।
ওই পুরসভায় মজুরি নিয়ে অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের অসন্তোষ নতুন নয়। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অস্থায়ী শ্রমিকদের একাংশ আন্দোলন করছিলেন। তার জেরে গত বছর জুলাই মাসে দৈনিক ৩০ টাকা মজুরি বাড়ানো হয়। পাঁচ মাস পরে আরও ৩০ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও পুর-কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। প্রতিবাদে অস্থায়ী শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন।
এর মধ্যেই সম্প্রতি শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন গজিয়ে ওঠে। বুধবার আইএনটিটিইউসি নেত্রী দোলা সেন এবং স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার সেখানে সভা করেন। তার পরেই মজুরি বাড়ানোর ঘোষণা। আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত নবগঠিত পুর মজদুর সংগঠনের সভাপতি নন্দদুলাল ভট্টাচার্য দাবি করেন, ‘‘আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েই পুর-কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ পক্ষান্তরে, সংগঠনের বাইরে থাকা আন্দোলনরত শ্রমিকদের বক্তব্য, রাতারাতি সংগঠন গড়ে মজুরি বৃদ্ধির পিছনে রয়েছে ভোটের চমক। সাধারণ কর্মীদের আন্দোলন ছিনিয়ে নিতে রাজনীতি করা হল। এক সাফাইকর্মীর কথায়, ‘‘গত জুলাই মাসে যখন মজুরি বাড়ানো হয়, তখন কিন্তু ওই সংগঠন ছিল না। সেই কৃতিত্ব কাদের? আর এ বার সংগঠন গঠনের ক’দিনের মধ্যেই মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা এবং তার কৃতিত্ব দাবি! গোটা বিষয়টি
সহজেই অনুমেয়।’’
বিদায়ী সিপিএম কাউন্সিলর সমীর মজুমদারেরও বক্তব্য, ‘‘ভোটের রাজনীতির জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’’ অভিযোগ উড়িয়ে গৌরীকান্তবাবুর বক্তব্য, ‘‘নিজেরা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন সিপিএম কোনও উন্নয়ন করেনি। এখন শ্রমিকদের প্ররোচিত করার
চেষ্টা করছে।’’