প্রতীকী ছবি।
করোনার প্রকোপ ফিরে আসা রুখতে হাওড়া জেলায় টিকাকরণ এবং পরীক্ষার উপরে জোর দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলা প্রশাসনের তরফে জোর দেওয়া হচ্ছে মাস্ক পরার উপরে। এই জেলায় আগামী ৬ এবং ১০ এপ্রিল দু’দফায় ভোটগ্রহণ। তার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জোরদার প্রচার চলছে। কিন্তু তাতে করোনা-বিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
জেলাশাসক মুক্তা আর্য জানান, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় সব প্রার্থীকে করোনা-বিধি মানার কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছেও অনুরোধ করা হয়েছে প্রচারের সময়ে প্রার্থীরা যেন এ ব্যাপারে জোর দেন। জেলাশাসক এ কথা বললেও বহু কেন্দ্রেই দেখা যাচ্ছে, প্রার্থী এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা কর্মী-সমর্থকরা মাস্ক পরছেন না। মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ববিধি। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভোটের পরে সংক্রমণের রেখচিত্র কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, এই নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। জেলাশাসক বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রচারসভা চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, বাজারে বেশি জমায়েত হয়। সে জন্য সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে বাজারে নজরদারিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘বাজারে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। মানতে হবে দূরত্ববিধি। বিভিন্ন বাজার সমিতির সঙ্গে শীঘ্রই বৈঠক করা হবে।’’
মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে হাওড়ায় দৈনিক সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারিতে যেখানে দৈনিক সংক্রমণ গড়ে ২০ জনের আশপাশে নেমে গিয়েছিল, এখন সেই হার ৩০ ছাড়িয়েছে। সোমবার আক্রান্ত হন ৩৯ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে আগামী ৪০ দিন ধরে দৈনিক ২০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। এখন টিকা দেওয়া হচ্ছে ষাটোর্ধ্ব এবং যাঁদের কো-মর্বিডিটি আছে, সেইসব ক্ষেত্রে ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের। আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছর পেরনো বয়সের সবাইকে টিকা দেওয়া হবে। এখন দৈনিক ১২০০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে ওই স্বাস্থ্যকর্তা জানান।
তবে করোনা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করেছে সিপিএম। তাঁদের প্রচারসভায় মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের উপরে জোর দেওয়া হয় জানিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘বাজার, স্টেশন চত্বর, গণ-পরিবহণ— সর্বত্র লাগামছাড়া ভিড় হচ্ছে। তা রোধ করতে কী করেছে জেলা প্রশাসন? রাজনৈতিক দলগুলিকে বিধি মানতে ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন ঠিক কী ধরনের সহায়তা চাইছে, খোলসা করে বলা হচ্ছে না। লিখিত ভাবে প্রস্তাব দেওয়া হোক।’’
বিতর্কে না-গিয়ে জেলা (গ্রামীণ) তৃণমূল সভাপতি তথা উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী পুলক রায় বলেন, ‘‘ফের যে ভাবে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তাতে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। আমরা দলের সব প্রার্থীদের এই নির্দেশ দিয়েছি।’’ শ্যামপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অমিতাভ চক্রবর্তী, আমতার ওই দলের প্রার্থী অসিত মিত্রদেরও দাবি, তাঁরা করোনা-বিধি মেনে চলছেন। উদয়নারায়ণপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অলোক কোলে প্রচারসভায় সবাইকে নিয়ম করে মাস্ক পরার কথা বলছেন। স্বাস্থ্যবিধি তাঁরা মানছেন বলে বিজপির জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি তথা উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের দলর প্রার্থী প্রত্যুষ মণ্ডলেরও দাবি।