তদন্তকারীদের অনুমান, গোটা ঘটনায় কালা জাদুর প্রভাব থাকতে পারে। প্রতীকী চিত্র।
পাণ্ডুয়ার খন্যান হস্টেল পাড়ার হাড়হিম করা ঘটনায় কালা জাদুর প্রভাব থাকতে পারে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। স্বামী সুবিকাশ ঘোষ ও মেয়ে সুলগ্না ঘোষকে বটি দিয়ে কোপানোর সময় তন্দ্রা ঘোষের মুখ থেকে বেরনো অসংলগ্ন কথা, মেঝেতে চাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেখে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মনে করছে পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ।
বাড়িতে চিৎকার-চেঁচামেচি, গোঙানির শব্দ শুনে পাড়া-প্রতিবেশীরাই বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। খবর পেয়েই সুবিকাশের বাড়িতে এসে পুলিশকর্মীরা দেখেন, বটি দিয়ে মেয়েকে কুপিয়েই চলেছেন মা তন্দ্রা। উন্মাদের মতো আচরণ করছেন তিনি। পাশে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন সুবিকাশ। বাড়ির তিন জনকেই এক তলার ঘর থেকে নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করেছিল পুলিশ। আর জামাকাপড় খুলে রাখা ছিল উপরে দোতলার ঘরে। সারা ঘরে মেঝেতে চাল ছড়ানো। এই সব তথ্য সংগ্রহের পরই তদন্তকারীদের অনুমান, গোটা ঘটনায় কালা জাদুর প্রভাব থাকতে পারে।
হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপার আমনদ্বীপ বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, এই ঘটনার পিছনে জাদুটোনার মতো বিষয় রয়েছে। এখনও তিন জনের সঙ্গে সে ভাবে কথা বলা সম্ভব হয়নি। কথা বললে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।’’
সুবিকাশ প্রাথমিক স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। সুলগ্না ইংরেজিতে স্নাতক। এমনিতে তাঁদের পরিবার নিয়ে পাড়া-প্রতিবেশীদের বিশেষ অভিযোগ নেই। তবে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার পর স্থানীয়দের একাংশ পুলিশকে জানান, সুবিকাশের বাড়ি থেকে প্রায়ই প্রার্থনার শব্দ শুনতে পেতেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, ঘটনার সময়ও তন্দ্রাকে চিৎকার করে তাঁরা বলতে শুনেছেন, ‘‘শয়তান দূর হ।’’ স্বামী সুবিকাশের শরীরে ‘শয়তানের বাস’ রয়েছে বলে মনে করতেন তন্দ্রা, এমনটাই জানান প্রতিবেশীদের একাংশ।
সুবিকাশের খুড়তুতো ভাই লক্ষ্মীকান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকেই অনেক অসংলগ্ন কথা বলে যাচ্ছে বৌদি। উন্মাদের মত আচরণ করছে।’’
সুবিকাশ ও তন্দ্রা বর্তমানে চুঁচুড়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সুলগ্নাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আপাতত তাঁরা স্থিতিশীল বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর।