—নিজস্ব চিত্র।
রাত হলেই প্রচণ্ড শব্দ হয় দেওয়ালে। কারা যেন কিছু দিয়ে দমাদ্দম মারছে! আজকাল প্রায় রোজই এমন শব্দে ঘুম ভেঙে যায় উত্তম বিশ্বাসের। গত শনিবারেই যেমন। কোনও মতে হাতড়ে হাতড়ে আলো জ্বেলে দেখলেন, রাত দুটো কুড়ি। শব্দ শুনে মনে হচ্ছে, কেউ যেন থান ইট ছুড়ে মারছে দেওয়ালে। লাফ দিয়ে উঠেছিলেন উত্তম। তার পর নিজেকে সামলে নিয়েই ছুটে বেরিয়ে গেলেন বাইরে। দেখতে চেয়েছিলেন, কেউ আছে কি না। কিন্তু নাহ্। কেউ ছিল না। ফিরে এসে আবার ঘুমোতে যান। আবার সেই শব্দ!
মহালয়ের পর থেকে এই উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন হুগলির পোলবার রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটুয়া গ্রামের বাসিন্দা উত্তমের পরিবার। ‘ভূতের উপদ্রব’ ভেবে আতঙ্কও ছড়িয়েছে এলাকায়। উত্তম এবং তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা জানান, রাত গভীর হলেই শব্দ বাড়তে থাকে। মহালয়ার পর থেকে প্রায় রোজই ঘটছে এই ঘটনা। পূর্ণিমার কথায়, ‘‘আমরা ছাদে ঘুরে দেখেছি। বাড়ির চারপাশটাও ভাল করে দেখেছি কিছু আছে কি না। কিন্তু কোথাও কিচ্ছু নেই।’’ এখন ওই শব্দ প্রতিবেশীরাও শুনতে পান। তাঁদের কারও কারও দাবি, কেউ হয়তো ভূতের ভয় দেখাতেই এ সব করছেন! কিন্তু তা হলেও চিন্তা কাটছে না। যদি কোনও রক্তমাংসের মানুষই এই উৎপাতের নেপথ্যে থেকে থাকেন, তা হলে তাঁর নিশ্চয়ই কোনও অসদুদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করছেন পড়শিদের একাংশ।
তবে গ্রামের অনেকেই ভূতের ভয় পাচ্ছেন। উত্তম জানান, পড়শিদের কথা শুনে ওঝা-গুণিনকেও বাড়িতে ডেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। গত শুক্রবার ভাটুয়া গ্রামে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের লোকেরা। মঞ্চের প্রতিনিধি সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘‘ও সব ভূতপ্রেত কিছু নয়। কেউ অসদুদ্দেশ্যেই এ সব করছেন। বিজ্ঞান মঞ্চ এসেছে দেখে সেই উৎপাত এখন কিছুটা কমেছে। তবে এখনও আতঙ্কে রয়েছেন পরিবারের লোকেরা। রাতে হঠাৎ হঠাৎ তীব্র শব্দে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে তাঁদের। আমরা আবার ওই বাড়িতে যাব।’’