ফাইল চিত্র।
আবাস তালিকায় থাকা উপভোক্তাদের নাম পর পর শোনানো হচ্ছিল আরামবাগের বাতানল পঞ্চায়েতের বিশেষ গ্রামসভায়। শনিবার সেই সভায় দিলীপ রায়ের নাম শুনেই উপস্থিত গ্রামবাসী প্রশ্ন তোলেন। কোন দিলীপ রায়? পঞ্চায়েত প্রধান উঠে বলেন, ‘‘আমি। তালিকা থেকে আমার নাম বাদ দেওয়া হোক।’’ তিনি এ কথা লিখিত ভাবে জানিয়েও দেন।
এ নিয়ে অবশ্য সভায় বিশেষ শোরগোল হয়নি। ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, প্রশাসনিক তদন্তে ২০১৮ সালের তালিকা থেকে বাতানলের প্রায় ১৫০ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও প্রায় ২৫০ জনের নাম নিয়ে প্রশ্ন আছে। সেগুলির মধ্যে ‘অযোগ্য উপভোক্তা’ নিশ্চিত করতেই বিশেষ গ্রামসভা। বাতানলের সভা থেকে প্রায় ১৫০ জনের নাম বাতিলের দাবি উঠেছে বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে। পরে প্রধানের দাবি, “পুরোনো সমীক্ষা অনুযায়ী আমার নাম থেকে গিয়েছিল। বাদ দিয়েছি।”
এ দিন বাতানল ছাড়াও বিশেষ গ্রামসভা হয়েছে আরামবাগের মায়াপুর-২ এবং হরিণখোলা ১ পঞ্চায়েতে। গত বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার জেলার ২০৭টি পঞ্চায়েতে আবাস সংক্রান্ত বিশেষ গ্রামসভা শেষ করার কথা থাকলেও আরামবাগ ব্লকের ওই তিন পঞ্চায়েতে বাকি ছিল। এ দিন সম্পন্ন হল।
মায়াপুর-২ পঞ্চায়েতের গ্রামসভায় ২০ জনের নাম তালিকা থেকে বাতিল হয়েছে বলে জানান উপপ্রধান আলোক সাঁতরা। হরিণখোলা-১ থেকেও প্রায় ১০০ জনের নাম বাতিল হয়েছে বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিকে, যথাযথ প্রচার ছাড়াই আবাস প্লাসের তালিকা যাচাই করতে বিশেষ গ্রামসভা হয়ে যাচ্ছে বলে সিপিএম এবং বিজেপির অভিযোগ। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যয় বলেন, ‘‘প্রথমত প্রচার হয়নি। তার উপর ধান ঘরে তোলা এবং আলু বসানোর মতো ভরা চাষের মরসুমে সভাগুলি হচ্ছে। প্রকৃত উপভোক্তাদের তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত ঠিক কী হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না।” বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, “গ্রামসভাগুলিতে আমাদের নজর আছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের অপেক্ষায় আছি আমরা। তাতে গরমিল থাকলে দল পদক্ষেপ করবে।” ব্লক প্রশাসন এবং পঞ্চায়েতগুলির দাবি, যথাযথপ্রচার হয়েছে।