TMC

TMC: আবাস প্রকল্পে কাটমানি, অভিযুক্ত নেত্রী ও স্বামী

গরিব মানুষদের ঘর পাইয়ে দিতে ১০ হাজার টাকা করে ‘কাটমানি’ চাওয়ার অভিযোগ উঠল গোঘাট-২ ব্লকের এক তৃণমূল নেত্রী ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

গোঘাট শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৮
Share:

প্রতীকী চিত্র।

সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য ‘কাটমানি’ নেওয়া বা তোলাবাজির বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি রয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। তারপরেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে গরিব মানুষদের ঘর পাইয়ে দিতে ১০ হাজার টাকা করে ‘কাটমানি’ চাওয়ার অভিযোগ উঠল গোঘাট-২ ব্লকের এক তৃণমূল নেত্রী ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

চায়না সেন নামে ওই তৃণমূল নেত্রী কামারপুকুর পঞ্চায়েতের সদস্য। তাঁর স্বামী কমলকান্তি এলাকার নেতা। দু’জনের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগে পঞ্চায়েত প্রধান তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি তপন মণ্ডলের দ্বারস্থ হয়েছেন একাধিক উপভোক্তা।

দম্পতি অভিযোগ মানেননি। চায়নার দাবি, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ। কারও কাছে টাকা চাইনি। গ্রামেরই কিছু নেতা আমার কাছ থেকে তালিকা নিয়ে উপভোক্তাদের থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করছেন।’’ কমলকান্তির দাবি, ‘‘আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

Advertisement

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তপনবাবু বলেন, ‘‘একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। কেউ যাতে কোথাও টাকা না দেন, তা বলে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত-সহ পঞ্চায়েতের সব সদস্য এবং দলের নেতাদের কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে, সরকারি প্রকল্পে পরিষেবা দিতে উপভোক্তাদের কাছে টাকা নেওয়া বা চাওয়ার অভিযোগ পেলেই সরসারি থানায় এফআইআর করব।’’

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ‘আবাস প্লাস’ অ্যাপের মাধ্যমে ওই পঞ্চায়েত এলাকায় উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। খসড়া তালিকা হয়ে গিয়েছে। এ বার চূড়ান্ত তালিকা হবে। এই অবস্থায় উপভোক্তাদের নাম নিশ্চিত করতে এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দ্রুত বাড়ি তৈরি করাতে সেন দম্পতি ১০ হাজার টাকা দাবি করছেন বলে অভিযোগ।

খসড়া তালিকায় শ্রীপুর গ্রামের প্রৌঢ়া মায়া বেগমের নাম রয়েছে। তিনি ভগ্নপ্রায় মাটির বাড়িতে থাকেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাম আমল থেকে আবেদন করেও ঘর পাইনি। দিন পাঁচেক আগে চায়নাদেবীরা মহাদেব রায় নামে এক জনকে পাঠিয়ে জানান, এ বার ঘর পাওয়ার তালিকায় আমার নাম আছে। কিন্তু কোন বছরে পাব, তার ঠিক নেই। এ বছরই ঘরের টাকা পেতে গেলে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে।’’ মায়াদেবীর সংযোজন, ‘‘ফুল বেচে সংসার চলে। অত টাকা পাব কোথায়? বিষয়টা প্রধানকে জানিয়েছি।’’ মহাদেব টাকা চাওয়ার অভিযোগ মানেননি।

চায়নাদের বিরুদ্ধে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে মালপাড়ার দিনমজুর রণজিৎ মাল, চা-দোকানি জয়দেব মাল, শেখপাড়ার নাসির খানেরও। রণজিৎ বলেন, ‘‘ঘরের তালিকায় নাম রয়েছে। কিন্তু সে জন্য ১০ হাজার টাকা দিতে হবে বলেছে। টাকা এখনও দিতে পারিনি।’’ বৃদ্ধ নাসির খান জানান, ১০ হাজার টাকা না দিলে নাম বাদ চলে যাবে বলে জানিয়েছেন সদস্যার পাঠানো নেতারা। উপায়ান্তর না দেখে ছেলেকে ওই টাকা জোগাড় করতে বলেছেন তিনি। নাসিরের ছেলে মিঠু বলেন, ‘‘হকারি করে খাই। অত টাকা জোগাড় করা মুখের কথা! বিষয়টা প্রধানের নজরে এনেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement